Breaking
23 Dec 2024, Mon

লালগড় ও নেতাই ভুলছে কী তূণমূলকে, উঠছে প্রশ্ন!

অরুপ মাজি ,জেএনএফ, লালগড় : লালগড় ও নেতাই রাজ্যের পালাবদলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় এই দুটি জায়গার নাম উঠে এসেছিল। ইতিমধ্যে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম সহ সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলি। বিভিন্ন জায়গায় চলছে রাজনৈতিক দল গুলির ঝান্ডা বাধা ও ফেস্টুন লাগানোর কাজ এবং দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে দেওয়াল লিখন । কিন্তু লালগড়, নেতাই-এ দেখা গেল এক অন্য চিত্র । লালগড় ও নেতাই জুড়ে রয়েছে বিজেপির ঝান্ডা ও দেওয়াল লিখন। তেমন দেখা মিলল না তৃণমূল, সিপিএম ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা। এক দুটো দেওয়াল লিখন রয়েছে তৃণমূল ও সিপিএমের। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি লালগড় ও নেতাই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে শাসক দল তৃণমূলের কাছ থেকে? না, ওই এলাকার তৃণমূলের নেতৃত্বরা লোকসভা নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না? যদিও ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি প্রসূন সড়ঙ্গী দাবি করেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকায় প্রচার কর্মসূচি করছে তৃণমূল কংগ্রেস। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ কর্মসূচি করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের দলীয় পতাকা দিয়ে ভরিয়ে দেওয়া হবে। প্রসূন বাবু বলেন,”নির্বাচনের কাজ আমরা বুথস্তর থেকে গত এক দেড় মাস আগে থেকেই শুরু করেছি। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের দলীয় কাজ হচ্ছে । মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়া হচ্ছে । মানুষের কাছে আমরা পৌঁছাচ্ছি। দলীয় পতাকা নিয়ে দলীয় কর্মীরা নামতে শুরু করেছে । খুব শীঘ্রই আপনারা দেখতে পাবেন ঝাড়গ্রাম জেলার চারটি বিধানসভায় সর্বস্তরে আমাদের কর্মীরা পতাকা নিয়ে নামছে । অনেকটা সময় আমরা ধীরে চলো নীতি নিয়ে চলছি । পতাকা, ব্যানার থেকে শুরু করে প্রচারের যে সমস্ত বিষয়গুলি রয়েছে সবকিছুই আমরা নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনেই করছি। কিছুদিনের মধ্যেই সমস্ত এলাকা তৃণমূলের দলীয় পতাকা দিয়ে ছেয়ে ফেলা হবে।”
নেতাই এর ঘটনা চক্রান্ত মানুষ বুঝতে পেরেছে তাই তারা অন্যান্য রাজনীতির দল করতে চাইছে এমনই দাবি করে ঝাড়গ্রাম জেলা সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রদীপ কুমার সরকার বলেন,”বাম জমানার শেষের দিকে একটা বড় চক্রান্ত কাজ করেছিল। এই চক্রান্তের সঙ্গে বড় মাপের পুঁজিপতিরা যুক্ত ছিল। তার অন্যতম কারণ হচ্ছে সিঙ্গুর, নেতাই । নেতাই-র ঘটনা প্রসঙ্গে তখন আমরা বলেছিলাম এটা একটা চক্রান্ত আজ তা প্রমাণিত হয়েছে। যাদের নেতাই-র মামলায় আটক করা হয়েছিল আজ তারা জামিনে মুক্ত হয়েছে । এই চক্রান্তে যারা বলি হয়েছেন বা যেই বাড়িটি ব্যবহার করা হয়েছিল ঘটনার সময় তারা কেউ ঘটনাস্থলে ছিলেন না । ঘটনা একটি ঘটেছে যা সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছিল। তৎকালীন পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে তখন ২০১১ সাল এখন ২০২৪ সাল এই ১৩ বছরে মানুষ তো সবকিছু বুঝতে পেরেছে । মানুষ ফিরে এসে বুঝতে পারছে প্রকৃত ঘটনাটা কে ঘটিয়েছিল । এই জন্যই শাসকদলের ওখানে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে দেখবেন ওইখানে আমরা দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছি । আমাদের বেশিরভাগ নেতৃত্বরা জেলের ভিতর ছিল তা সত্য আমরা দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছি । ওই এলাকায় আমাদের দলের লোকজনেরা দাপিয়ে কাজ করছে। তার ফলাফল কিছুদিনের মধ্যেই আপনারা দেখতে পাবেন। তার জন্যই তৃণমূলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ওই এলাকার মানুষজন অন্যান্য রাজনৈতিক দল করতে চাইছে। বিজেপি তারা তাদের কাজকর্ম শুরু করেছে, আমরা একটু দেরিতে হলেও আমাদের কাজকর্ম শুরু করেছি। তার জন্যই ওখানে বিজেপি ও আমাদের দলীয় পতাকা দেখা যাচ্ছে কিন্তু তৃণমূলের কোন দলীয় পতাকা দেখা যাচ্ছে না । ভবিষ্যতে ওই এলাকায় শাসক দলের আর কোন দলীয় পতাকা দেখা যাবে না।”
জঙ্গলমহলের হাত ধরেই পরিবর্তন এসেছে তা অতীতের দিনগুলিতে প্রমাণিত হয়েছে। এবারও হতে চলেছে । এমনি দাবী করে ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুন্ডু বলেন,”আমরা জানি যে কংগ্রেস আমল থেকে ,সিপিএম আমল থেকে,তৃণমূলের আমলে আমরা দেখেছি বিভিন্ন সময় যে পরিবর্তন এসেছে সেটা জঙ্গলমহলের হাত ধরে এসেছে । এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না । লালগড় কেন সমস্ত জেলা জুড়েই দেখা যাচ্ছে কেবলমাত্র বিজেপির পতাকা উড়ছে অন্যান্য কোন রাজনৈতিক দলের পতাকা নেই। কারণ তাদের পাতাকা লাগানোর মতন লোকেই নেই। ওরা ভোটে করবে কি করে । বর্তমানে শাসক দল তৃণমূলের কোনো কর্মী বা কার্যকর্তা নেই তারা প্রশাসনকে দিয়ে দলটা চালাচ্ছে । আগামী দিনে কোন কর্মসূচিতে তাদের লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না।”

Developed by