ঝাড়গ্রাম: অভিষেকের কনভয়ে হামলা এবং মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের ব্লু-প্রিন্ট কে তৈরি করেছিল তা জানার জন্য ধৃত কুড়মি নেতাদের জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি পেল সিআইডি । মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামের এডিজে ১ আদালতে জেল হেফাজতে থাকা নয় জন কুড়মি নেতার মধ্যে নীতিশ মাহাতো বাদে ৮ জনকে জেল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করা হয় সিআইডির পক্ষ থেকে । আবেদন মঞ্জুর করে এডিজে ১ আদালত । এছাড়াও কুড়মিদের ঘাঘর ঘেরা কর্মসূচীর সাইকেল রেলি চলাকালীন সাইকেল রেলিতে মেডিকেল টিম এবং এম্বুলেন্স দেওয়ার দাবিতে জামবনি ব্লকে পথ অবরোধ করেছিল কুড়মি সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্বরা । সেই ঘটনায় জামবনি থানার পুলিশ সুওমট মামলা রুজু করেছিল । সেই মামলায় কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো এবং আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতোর নাম ছিল । আজ সিজেএম আদালতে জামবনি থানার পুলিশ তাদের সোমএরেস্টের জন্য আবেদন করে । জামবনি থানার এই আবেদন মঞ্জুর করে ঝাড়গ্রামের সিজেএম আদালত ।
নবজোয়ার কর্মসূচিতে ঝাড়গ্রামের গড় শালবনিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের উপর হামলা এবং রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার তদন্তভার ইতিমধ্যেই নিয়েছে সিআইডি । সোমবার সিআইডি ঝাড়গ্রামের এডিজে ১ আদালতে ধৃত কুড়মি নেতাদের তদন্তের জন্য ১০ দিনের নিজেদের হেফাজতে চেয়েছিল । সিআইডির সেই আবেদন খারিজ করে ধৃত কুড়মি নেতাদের আগামী ১২ই জুন পর্যন্ত ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন । এরপরেই এদিন ঝাড়গ্রামের এডিজে ১ আদালতে নীতিশ মাহাতো বাদে রাজেশ মাহাতো, শিবাজী মাহাতো, অনুপ মাহাতো সহ মোট আটজন কুড়মি নেতাকে জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করে সিআইডি । কুড়মি নেতাদের কেন জেলে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে সেজন্য সিআইডি আদালতকে জানিয়েছে, এই হামলার পিছনে কি কারন রয়েছে ? বৃহৎ ষড়যন্ত্রে সত্য উদঘাটনের জন্য ? এদের প্রত্যেকের কি ধরনের ভূমিকা রয়েছে ? ষড়যন্ত্রের ব্লু-প্রিন্ট কে করেছিল? আর কারা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে ? সরকারি আইনজীবী প্রশান্ত রায় বলেন, “সিআইডি জেল হেফাজতে থাকা কুড়মি নেতাদের জেল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন জানিয়েছিল এডিজে ১ আদালতে । আদালত সিআইডির জেল জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করে” ।
প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে বারে বারে শোনা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামের গড়শালবনিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় এবং মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা বিজেপি ঘটিয়েছে । অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গজাশিমুল থেকে কুড়মিদের উদ্দেশ্যে সাফ জানিয়েছিলেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বিবৃতি দেওয়ার জন্য এই ঘটনার সঙ্গে কুড়মি সমাজ জড়িত রয়েছে কিনা । কুড়মিদের সমস্ত সংগঠন সাংবাদিক সম্মেলন করে জানায় এই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই । এই ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন গ্রেফতার হওয়া পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো । যদিও রাজেশ মাহাতো সহ অন্যান্য কুড়মি নেতারা বারে বারে দাবি করেছেন ঘটনার সত্যতা সামনে আসুক । তারা সিআইডি নয় সিবিআই তদন্তর দাবি জানিয়েছেন ।