ঝাড়গ্রাম : প্রেমিকার গোপন ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি এবং বিয়ে ভাঙ্গার অভিযোগে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভাইপোকে গ্রেপ্তার করল ঝাড়গ্রাম সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ। দিলীপ ঘোষের ছোট ভাই হীরক ঘোষের ছেলে অরিন্দম ঘোষ (২৩) কে শনিবার গ্রেফতার করে সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ । ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের কুলিয়ানা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুলিয়ানা গ্রামে দিলীপ ঘোষের বসতবাড়ি । সেইখানেই সপরিবারে বসবাস করেন দিলীপ ঘোষের ভাই হীরক ঘোষ । অরিন্দম গ্রেজুয়েশন পাশ করার পর একটি বেসরকারি সংস্থায় সদ্য কাজে নিযুক্ত হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বেলিয়াবেড়া থানার অন্তর্গত এক যুবতী শনিবার ঝাড়গ্রাম সাইবার ক্রাইম থানায় এসে অরিন্দমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানায় । সাইবার ক্রাইমের ডিএসপি সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “এক যুবতী অরিন্দমের বিরুদ্ধে ওই যুবতীর গোপন ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি এবং কয়েকবার বিয়ে ভাঙ্গার অভিযোগ তুলে একটি লিখিত অভিযোগ করে । সেই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় অরিন্দমকে” । পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অরিন্দমের বিরুদ্ধে ৫০৬, ৫০৯ এবং ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যাক্ট ৬৬ E এবং ৬৬সি ধারায় মামলা রুজু করে রবিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে পেশ করা হয়। জানা গিয়েছে, অরিন্দমের সঙ্গে ওই যুবতীর প্রায় তিন বছর ধরে এক প্রেমের সম্পর্ক ছিল । অরিন্দমের বাবা হীরক ঘোষ বলেন, “চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মেয়ের বাবা এবং জেঠু আমাকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক জানিয়েছিল। প্রেম ভালবাসাকে আমি পবিত্র চোখেই দেখি । আমি বলেছিলাম ছেলে সদ্য গেজুয়েশন পাস করেছে । এখনো রোজগার করতে শিখেনি । ছেলে বা মেয়ে দু’জনের কেউ রোজগার করুক তাহলেই আমি বিয়ে দিয়ে দেব। আমি সেদিন একথায় তাদেরকে বলেছিলাম । তারপর আমি কিছুই জানতে পারিনি। আমার স্ত্রীর কাছে গতকাল রাত্রে জানতে পারি তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে । শনিবার সকাল ১১ টার সময় সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ তাকে ডেকে পাঠায় এবং আমাদেরকে কোন কিছু না বলেই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ”। হীরক বাবু আরো দাবী করেন, “আমার দাদা ( দিলীপ ঘোষ ) রাজনীতিতে রয়েছেন, আমি রাজনীতি করি, ছেলেটাও রাজনীতি করছিল । সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে আমাদেরকে বদনাম করার জন্য এবং হিংসা ছড়ানোর জন্য তৃণমূলের লোকজন মেয়ের পরিবারের লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে মামলা করানো হয়েছে”। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু বলেন, “আমাদের খেয়েদেয়ে আর কাজ নেই যে আমরা চক্রান্ত করতে যাব । যেমন কর্ম করেছে তেমন তার ফল পেয়েছে । এই থেকে বুঝা যাচ্ছে বিজেপির লোকজনেরা মা-বোনদের কতটা সম্মান করে” ।
বরিবার অরিন্দমকে ঝাড়গ্রামের এসিজিএম আদালতে পেশ করা হয়। অরিন্দমের আইনজীবী সুমন সেন বলেন , “আমার মক্কেল এই ঘটনার সঙ্গে কোনভাবেই জড়িত নয় । তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে । জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন মহামান্য বিচারক “।