Breaking
23 Dec 2024, Mon

১৫০ বছর পুরোনো প্রাচীন শিব মন্দিরের লিঙ্গের মাথায় কপানোর দাগ!

১৫০ বছর পুরানো পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মেচেদা চিমুটিয়া গ্রামের এই শিব মন্দির সারা ভারতবর্ষের মন্দির গুলির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। কারন মহাদেবের বিকৃত লিঙ্গ শুধুমাত্র এই মন্দিরে এলেই লক্ষ্য করা যায়। বিশালা কৃতির এই শিব লিঙ্গে মাথায় রয়েছে কোদাল দিয়ে কপানোর দাগ। শোনা যায় ব্রিটিশ আমলে চিমুঠিয়া গ্রামের অধিকাংশ এলাকায় বন-জঙ্গলে ঢাকা ছিল, এখানের অধিকাংশ মানুষ গবাদী পশু চাষের সাথে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু যে আশায় তারা গবাদিপশু চাষ করতেন অর্থাৎ দুধের আসাতে সেই আশা তাদের পূরণ হতো না। কারণ এলাকার মানুষ বলছেন বনের ওই অংশ অর্থাৎ যেখানে শিব লিঙ্গটি রয়েছে সেখানে গবাদি পশুরা বিচরন করতে গিয়ে তাদের শরীরে উৎপাদিত দুধ শিবলিঙ্গে গিয়ে অর্পণ করত। রহস্য বাঁধে গবাদিপশুর মালিকদের মধ্যে প্রত্যক্ষ করতে করতে হঠাৎই গবাদি পশুদের এহেন দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে ছিল চিমুটিয়া গ্রামের মানুষ জন, রহস্য উন্মোচন করতে শুরু হয় ওই অংশের মাটি খোঁড়ার কাজ। সেই সময় কোদালের আঘাতে আঘাত প্রাপ্ত হয় ওই শিব লিঙ্গ যার অক্ষত ক্ষত শিবের মাথায় এখনো বিরাজমান। শুধু তাই নয় এই শিব লিঙ্গ সরিয়ে রেললাইন পাতার কাজ শুরু করতে চেয়ে ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার, ১৮৮৪ সালে তৎকালিন ব্রটিশ আমলে রেললাইন পাতার কাজ চল ছিল, কলকাতা থেকে খড়গপুর গামী রেলপথ বিছানোর সময় কার্যত জোর করে এই মন্দির সরানোর কাজ করতে চেয়ে ছিল রেল কর্তৃপক্ষ, শোনা যায় মন্দির সরাতে গিয়ে ব্রিটিশদের অধীনে থাকা এক রেল কর্মীর মৃত্যুও হয়ে ছিল তৎকালীন সময়ে। তারপরে কার্যত মহাদেবের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হয়ে ছিল রেল কর্তৃপক্ষ। বাধ্য হয়ে ওই জায়গা থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল রেল লাইন পাতার কাজ। সেই কারনে এখনো মন্দিরের ওই অংশে রেল লাইন বাঁকা অবস্থায় রয়েছে। সে সময় থেকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মেচেদা চিমুটিয়া গ্রামে অবস্থিত এই শিব মন্দিরের মাহাত্ম্য জেলার মানুষের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ আমল থেকে এখনো পর্যন্ত মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা ভক্তির মাথে এই মন্দির মুখি হন। শিব রাত্রির দিন মহাদেবের আশীর্বাদ পেতে হাজার হাজার ভক্তরা ভিড় করেন এই মন্দির প্রাঙ্গনে। তবে সারা ভারতবর্ষের মধ্যে অন্যতম চিমুটিয়া গ্রামের এই মন্দিরে আরো একটি আমাকে দেওয়ার মতো ঘটনা পূর্ব পুরুষদের কাছে এখনো ইতিহাস, কোন জায়গাতে সাদা ঘোড়ার পিঠে সাদা ধুতি পরে চারপাশ পরিধান করেন সয়ং মহাদেব, তাই জীবন্ত মহাদেবের আশীর্বাদ পেতে শিব রাত্রির পাশাপাশি চৈত্র মাসের শেষ দিনটিতেও হাজার হাজর মানুষ মহাদেবের দর্শন পেতে ভিড় করেন এই মন্দির প্রাঙ্গণে। তবে স্থানীয়রা মনে করছেন এই মন্দির ভারতবর্ষের অনান্য শিব লিঙ্গের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা মাহাত্ম্য যুক্ত মন্দির। যা শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয় সারা ভারতবর্ষের মানুষের কাছে এই মন্দিরের মাহাত্ম্য তুলে ধরা দরকার।

Developed by