Breaking
23 Dec 2024, Mon

ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে মাত্র ১০ হাজার টাকার মধ্যে নতুন গাড়িটি তৈরি করে তাক লাগালেন নদীয়ার সঞ্জয়

গাড়ি চড়তে চালাতে কে না ভালোবাসে? তবে ঝাঁ চকচকে শোরুম থেকে , বিরাট অর্থব্যায়ে গাড়ি কেনা অনেকের ক্ষেত্রেই সম্ভবপর হয়ে ওঠেনা ।তবে, এক্ষেত্রে শখের দাম লাখ টাকা নয় ,মাত্র দশ হাজার টাকা। শান্তিপুর বৈষ্ণব পাড়ার সঞ্জয় প্রামাণিক যখন আছে, তখন দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে দেবেন ঠিকই।সঞ্জয়বাবু ইঞ্জিনিয়ার নন, পেশায় মন্ডপ সজ্জার শ্রমিক। তবে নেশায়, অসাধ্য সাধন, লকডাউন এর মধ্যে ঘরে বসে, বিভিন্ন বাতিল দ্রব্য ভাংড়ি গোলার পরিত্যক্ত ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে , অভাবের সংসারে ছোট ভাইপোর বায়না সামলাতে বানিয়ে ফেলেছিলেন আস্ত একটি গাড়ি। নাম দিয়েছিলেন আমি একা। তবে অবিবাহিত সঞ্জয় বাবু এখনো জোটিতে পারেননি দোকা। তবে পূর্বের গাড়িতে শুধুমাত্র চালক আসন ছিলো।
তবে এবারে, তারই নতুন সংস্করণ, চালকের পাশে আর একটি ইসন বেড়েছে।আরো অভিনব আরো আকর্ষণীয়। তবে গাড়ির দরজা থেকে, সিলিং, চাকা থেকে ব্যাকলাইট, হ্যান্ডেল থেকে , চেসিস সবই বাতিল জিনিস পত্র দিয়ে।হেডলাইট থেকে ইন্ডিকেটর হর্ন থেকে, ব্যাক গিয়ার মিউজিক, গান শোনার ব্যবস্থা, জলের বোতল লাগেজ রাখার ব্যবস্থা, সবকিছু সুবিধা রয়েছে গাড়িতে। আর এত কিছু মাত্র ১০ হাজার টাকায়, তবে ব্যাটারি আর মটর বাদে । এ দুটো কার্যকারিতা এবং অর্থের সমর্থ্য অনুযায়ী , লাগিয়ে দেন তিনি। সঞ্জয় বাবু বলেন,এবারের গাড়িটি মূলত এক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কলেজ পড়ুয়ার অর্ডার অনুযায়ী জন্য বানানো হয়েছে। আজ তারই হাতে তুলে দেওয়ার আগে একবার ট্রায়াল দিয়ে দেখে নিচ্ছেন তিনি। তবে প্রতিবাদী ব্যক্তি, বয়স্ক মানুষ এমনকি শিশু বা গৃহবধূরা অনায়াসে নিরাপদে এই গাড়ি চড়তে বা চালাতে পারেন।
সঞ্জয়বাবুর আরেকটি নেশা আছে, তিনি বিভিন্ন গাছের শেকড় থেকে ভাস্কর্য তৈরি করেন। আফফান ঝড় হোক বা সাধারণ কালবৈশাখী, উল্টে যাওয়া গাছের শেকড়ের অংশ দিয়ে ঘর সাজানো সৌখিন দ্রব্য, অসংখ্য অসাধারণ ভাস্কর্য সাজিয়ে রেখেছেন তার ভাঙ্গা ঘরে। চোখের সামনে ফেলে দেবার জিনিস কুড়িয়ে রাখেন তিনি, আর তা দিয়ে অকল্পনীয় নানান আকর্ষণীয় বিষয় উপস্থাপিত করার ঐশ্বরিক ক্ষমতা তার মধ্যে আছে। আজ ট্রায়ালে বেরিয়ে তার গাড়ির দিকে, তাকাননি এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। ‌ বাস লরি থামিয়ে, একটু চালিয়ে দেখছেন অন্য গাড়ির চালকরা। পথচারীরা তুলছেন সেলফি। সঞ্জয়বাবুর সাথে যোগাযোগের কোনো ফোন নাম্বার নেই, তিনি মানেন ওতেই নাকি যত বিপত্তি, ধরা দিলেই সহজলভ্য হয়ে যায়। আকর্ষণের জন্য প্রতীক্ষার দরকার হয়, তবেই সে স্বাদ মিঠা লাগে। শান্তিপুর পৌরসভার সিএসসি মেম্বার শুভজিৎ দে, পথের মাঝেই তাকে এই আবিষ্কারের জন্য দিলেন সংবর্ধনা। শুনলেন গাড়ি তৈরির নানান কাহিনী।

Developed by