——————–*———–
বিশ্বকাপ মানে বিশ্বযুদ্ধ। তবে বাঁকুড়ার জেল রোডের মুখোপাধ্যায় পরিবারে বিশ্বকাপ মানেই গৃহযুদ্ধ। পতাকা টাঙানো থেকে শুরু করে বাড়ির দেওয়াল দখল সবেতেই গৃহকর্তার সাথে সমানে সমানে লড়াই দুই ছেলের। আর হবে নাই বা কেন। ফুটবল পাগল ওই পরিবারের গৃহকর্তা যেখানে ব্রাজিলের কট্টর সমর্থক সেখানে তাঁর দুই ছেলে যথাক্রমে আর্জেন্টিনা ও জার্মানির কট্টর সমর্থক।
বাঁকুড়ার জেল রোডের মুখোপাধ্যায় পরিবার আপাদমস্তক ফুটবল পাগল। একসময় এই পরিবারকে সকলেই একডাকে চিনত কট্টর ব্রাজিল সমর্থক হিসাবে। সৌজন্যে গৃহকর্তা হিমাদ্রী শেখর মুখোপাধ্যায়। কিন্তু বছর দশেক আগে এই মুখোপাধ্যায় পরিবার ভাগ হয়ে যায় তিন ভাগে। বড় ছেলে দেবরাজ হয়ে ওঠে কট্টর আর্জেন্টিনা সমর্থক। ছোট ছেলে দেবায়ন একটু বড় হতেই সে আবার হয়ে ওঠে জার্মানির কট্টর সমর্থক। বিশ্বকাপ শুরু হতেই তাই তিন দেশের তিন কট্টর সমর্থকের উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। ভাগাভাগি হয়ে যায় মুখোপাধ্যায় পরিবারের সাদামাটা দোতলা বাড়িটা। বাড়িতে নিজের নিজের সমর্থিত দেশের পতাকা টাঙানো নিয়ে শুরু হয় দড়ি টানাটানি। কে কত উচুতে পতাকা টাঙাতে পারে তা নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। সংখ্যায় ও বহরে গৃহকর্তা হিমাদ্রী শেখরের পতাকা বড় হলেও স্কুলের টিফিনের টাকা জমিয়ে ছেলেরাও পতাকা কিনে সেগুলি টাঙিয়েছে ঘর জুড়ে। আগামী একমাস জুড়ে সব সম্পর্ক ভূলে বাবা ও ছেলেরা হয়ে ওঠে প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতিপক্ষ। প্রতিপক্ষের সাথে খেলায় কখনো কখনো নিজেদের মধ্যে এমন উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরী হয় যা সামাল দিতে রিং এ রেফারির ভূমিকায় নামতে হয় মা চন্দ্রানী মুখোপাধ্যায়কে। বিশ্বকাপ চলাকালীন বাবা ও দুই ছেলের মধ্যে ফুটবল নিয়ে মুখোপাধ্যায় পরিবারের এই আকচাআকাচি এখন তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করছেন মুখোপাধ্যায় পরিবারের প্রতিবেশীরা।