জেএনএফ ওয়েব ডেস্ক : তরতাজা ২৩ বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে মারণব্যাধি ক্যান্সারে। তবে সেই ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের হাতে একাধিক ফুল ও ফলের গাছ তুলে দিলেন বাবা-মা ও পরিবারের লোকজন। ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাঁচি শহরের কডরু রোডের ওল্ড এজি কলোনির বাসিন্দা শুভাশিস বক্সী ও মৌসুমী বক্সীর একমাত্র ছেলে অর্পণ বক্সী ওরফে যীশু হোটেল ম্যানেজমেন্টের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। মাস ছ’য়েক আগে অর্পণের কিডনিতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। ভেলোরে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস চিকিৎসা করানো হয়। পরে অর্পণকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। একাধিক কেমোথেরাপি নিতে গিয়ে কাহিল হয়ে পড়েন তরতাজা তরুণটি। গত ২৬ শে মে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতলে প্রয়াত হয় অর্পণ। সন্তানহারা বাবা-মা ঠিক করেন ছেলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান নয়, ‘মুক্তি’ অনুষ্ঠান করবেন। ঘটনাচক্রে রবিবার ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসেই অর্পণের সেই ‘মুক্তি’ অনুষ্ঠানের দিন ধার্য হয়েছিল। এদিন অতিথি ও আমন্ত্রিতদের প্রত্যেকের হাতে একাধিক ফুল ও ফলের গাছ তুলে দেন শুভাশিসবাবু ও মৌসুমীদেবী ও পরিবারের লোকজন। কোল ইন্ডিয়ার সহযোগী সংস্থা সিসিএলের প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার শুভাশিসবাবু বলেন,‘আমার বাড়ির একতলার দুই ভাড়াটিয়া বলরাম শ্যামল, শুভাশিস মিশ্র এবং পরিবার ও স্বজন বন্ধুরা মিলে ঠিক করি অর্পণকে বাঁচিয়ে রাখব প্রকৃতির মাঝে। তাই এমন উদ্যোগ। প্রত্যেককে যে সব গাছ এদিন উপহার দেওয়া হয়, তাঁদের অনুরোধ করেছি গাছ গুলিকে যেন তাঁরা বড় করে তোলেন। সেই গাছগুলির মধ্যেই আগামী দিনে আমাদের অর্পণকে বেঁচে থাক।’ একমাত্র ছেলের প্রয়াণে প্রকৃতিকেই আঁকড়ে ধরতে চান শুভাশিস বাবু ও মৌসুমীদেবী। তাঁরা জানাচ্ছেন,‘বাড়ির সামনে বাগান করার একটি জায়গা রয়েছে সেখানেও গাছ রোপণ করে অর্পণের নামাঙ্কিত করে এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হবে।’ এদিনই অর্পণের স্মৃতিতে একটি বই প্রকাশ করা হয়। পরিবারের সদস্য, বন্ধু, শিক্ষক ও পরিচিতজনেরা সেখানে অর্পণকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন।