সকাল থেকে তীব্র গরমে হাসফাঁস অবস্থার পর শনিবার বিকেলে কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে বর্ধমান শহরের জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল ১৪বছরের এক বালকের। নাম সেখ আলিশান। জখম হয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আরো দুজন বালক। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে বর্ধমানের ৫নং ওয়ার্ডের রাজারবাগান ট্রাফিক কলোনি এলাকায়।
স্থানীয় কাউন্সিলর ইফতিকার আহমেদ জানিয়েছেন, এদিন এলাকার একটি চায়ের দোকানে ক্যারাম খেলছিল এলাকার কিছু বাচ্চা ছেলে। তার সামনেই বহু পুরনো দুটি প্রায় মৃত জিলিপি গাছ ও শিরীষ গাছ ছিল। এদিন কালবৈশাখীর ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হতেই সেই গাছ দুটি চায়ের দোকান ও তার পাশের দুটি বাড়ির ওপর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে। বাড়ি থেকে বাসিন্দারা বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও চায়ের দোকানের ভিতর সেখ আলিশান নামে ১৪বছরের এই বালক ক্যারাম বোর্ডের স্ট্যান্ডের নিচে চাপা পড়ে যায়। স্থানীয় মানুষ দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধার কাজে হাত লাগলেও বালক টিকে বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনায় আরো দুজন বালক কে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর পর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইফতিখার আহমেদ জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর গোটা এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে বিপর্যয়ের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দমকলের একটি ইঞ্জিন, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা। দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে যান বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক খোকন দাস, পাশের ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নুরুল আলম সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা। ভেঙে পড়া গাছ দুটিকে কেটে সরিয়ে ফেলার কাজ শুরু করেছে দমকল ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
এদিন বিধায়ক থেকে কাউন্সিলার প্রত্যেকেই এই বিপর্যয়ের জন্য রেল দপ্তরের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। বিধায়ক খোকন দাস বলেন,” স্থানীয় ৪,৫,৬নং ওয়ার্ডের বেশির ভাগ অংশই রেলের এলাকার মধ্যে পড়ে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা নিকাশি ড্রেন সংস্কার করা কিংবা মরে যাওয়া গাছ গুলিকে কেটে সরিয়ে ফেলার কোনো উদ্যোগই নেয় না। আমরা এই সব কাজ করতে চাইলেও রেলের বাধায় করতে পারিনা। আর হটাৎ এইধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ এলেই বিপদের মধ্যে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।”