মনিরুল হক, কোচবিহারঃ একেবারে রাস্তায় নেমে নিকাশি নালা ও জঞ্জাল পরিষ্কারের কাজ ক্ষতিয়ে দেখলেন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাও আবার নিজেদের দলের বা নির্দলের কোন কাউন্সিলারের ওয়ার্ড নয়, চরম বিরোধী রাজনৈতিক দল সিপি আইএম কাউন্সিলার দীপক সরকারের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে চলা নিকাশি নালা ও জঞ্জাল পরিষ্কারের কাজ ক্ষতিয়ে দেখতে দেখা গেল বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। এপ্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ বাবু বলেন, “বিরোধী দলের কাউন্সিলার বলে কোন কথা হয় না। ভোটের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে লড়াই হয়। কিন্তু ভোটের পরে আর সেসব থাকে না। আমরা সব ওয়ার্ডে উন্নয়নের কাজ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে করতে চাই। প্রাথমিক ভাবে নিকাশি নালা সংস্কার, জঞ্জাল পরিষ্কার করে শহরকে ঝাঁ চকচকে করার সিধান্ত হয়েছে বোর্ড মিটিংয়ে। সেই অনুযায়ী কাজও শুরু হয়েছে। এদিন সেই কাজই ক্ষতিয়ে দেখতে এসেছি।”
এবার কোচবিহার পুরসভার নির্বাচনেও যেমন নানান চমক দেখা গিয়েছে। তেমনি নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেও সেই চমক অব্যাহত থেকেছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে শুরু করে প্রত্যাহার পর্যন্ত এই শহরে বিরোধীরাও সরকারি দলের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার কোন অভিযোগ তুলতে পারে নি। ভোটের দিন দুই একটি ওয়ার্ডে টুকটাক অভিযোগ উঠলেও বড় কোন গণ্ডগোল দেখা যায় নি। বরং তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদেরও ভোটে লড়াই করে জয়ী হতে দেখা গিয়েছে এই শহরে। জয়ী হয়েছেন দুই বাম কাউন্সিলারও। ভোটের পর সব থেকে বেশী আসন পাওয়া তৃণমূল কংগ্রেস বোর্ড গঠন করেছে। চেয়ারম্যান হয়েছেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। চেয়ারম্যান হওয়ার পরেই তিনি তাঁর নিকটতম পরাজিত বিজেপি প্রার্থী পঙ্কজ বুচ্চার বাড়িতে গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সেই থেকে কোচবিহারের রাজনীতিতে একটি ব্যতিক্রমী নজির স্থাপন হতে শুরু করে। এদিনও সিপিআইএম কাউন্সিলারের ওয়ার্ডে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ বাবু নিকাশি নালা সংস্কার এবং জঞ্জাল পরিষ্কারের কাজ সরজমিনে ক্ষতিয়ে দেখে সেই নজিরই স্থাপন করলেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।
দীর্ঘদিন প্রশাসকের দায়িত্বে চলা কোচবিহার পুরসভার পরিষেবা মূলক কাজ নিয়ে বাসিন্দাদের নানান অভিযোগ শুনতে পাওয়া গিয়েছে। তাই বোর্ড গঠনের পর সমস্ত কাউন্সিলারদের নিয়ে বৈঠক করেন চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সেখানেই প্রাথমিক ভাবে পুর নাগরিকদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কি কি কাজ করা দরকার, তা নিয়ে আলোচনা এবং সিধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিধান্ত অনুযায়ী জঞ্জাল পরিষ্কার, নিকাশি নালা সংস্কার, মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা, পথ বাতি সারিয়ে সব রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা সহ একাধিক কাজের সিধান্ত নেওয়া হয়। ওই বৈঠকের পরের দিন থেকেই কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরু হয় কোচবিহার পুরসভায়।