কোচবিহার: নিজের রাজনৈতিক শিষ্যের সাথে নতুন করে সম্পর্ক জোড়া লাগার বিষয়টি ভবিষ্যতের উপরেই ছাড়লেন কোচবিহারের বর্ষীয়ান তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। আজ সদ্য কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া পার্থ প্রতিম রায় বর্ষীয়ান তৃণমূল কংগ্রেস নেতা রবীন্দ্রনাথ বাবুর বাড়িতে যান। রবি বাবুর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে দেখা যায় পার্থ প্রতিম রায়কে। তারপর দুজনের মধ্যে আলোচনাও হয়। পরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় রবীন্দ্রনাথ বাবু বলেন, “এখানে কাকা ভাতিজার কোন ব্যাপার নেই। রাজনৈতিক সম্পর্ক। সাংগঠনিক সম্পর্ক। ব্যক্তিগত সম্পর্ক এক জিনিস। আর রাজনৈতিক সম্পর্ক আরেক জিনিস। জেলা সভাপতি হয়েছে। তাই এসেছে। এটাই স্বাভাবিক।” কিন্তু পার্থ প্রতিম রায়ের সাথে ফের সম্পর্ক দানা বাঁধবে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে রবীন্দ্রনাথ বাবুকে বলতে শোনা যায়, “সময় কথা বলবে।”
পার্থ বাবু সাক্ষাতের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “ কাকার সাথে সম্পর্ক বরাবর ছিল। আগামীদিনেও থাকবে। এক সাথে চলতে গেলে মতান্তর হয়, কিন্তু মনান্তর হয় না। তাই সব জায়গায় যাওয়া যায়। গতকাল এবং আজ সাক্ষাৎ। টেলিফোনিক কথা। সবটাই আমরা করেছি। দল আসলে আমাদের প্রায়োরিটি। দল যা চাইছে, আমরা সেটাকে গুরুত্ব দেওয়া চেষ্টা করছি। আমাদের মূল লক্ষ্য বিজেপি জেলা থেকে নির্মূল করব।”
এক সময় পার্থ প্রতিম রায় রাজনৈতিক ভাবে তুলে নিয়ে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ বাবু। তাঁর চেষ্টাতেই সাংসদ হয়েছিলেন পার্থ প্রতিম রায়। এরপরেই দুজনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। এক সময় অভিমান করে রবীন্দ্রনাথ বাবুকে বলতে শোনা যায়, আর যাতে কেউ তাঁকে কাকা বলে না ডাকে। সেই থেকে কোচবিহার জেলার রাজনীতিতে কাকা-ভাইপো শব্দটি ব্যাপক মাত্রা পায়। দীর্ঘ সময় ওই বিরোধ চললেও সম্প্রতি জেলা সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে কাকার সাথে নতুন করে সম্পর্ক জোড়া লাগাবেন বলে ঘনিষ্ঠ মহলে পার্থ প্রতিম রায়কে বলতে শোনা যায়। গতকাল কোচবিহার শহরের হাসপাতাল লাগোয়া রাস্তায় গাড়িতে বসা রবীন্দ্রনাথ বাবুর সাথে পার্থ প্রতিম রায়কে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখা যায়। সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতেই জেলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল শুরু হয়। আজ ফের পার্থ প্রতিম রায় সকাল সকাল রবীন্দ্রনাথ বাবুর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন পল্লি এলাকার বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন পার্থ প্রতিম রায়।
এদিনের এই সাক্ষাতের পর আদৌ আর দুজনের সম্পর্ক জোড়া লাগবে কিনা, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ বাবু বিষয়টি সময়ের উপরে ছেড়ে দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন পথ নেই।