জেএনএফ কোচবিহারঃ বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়া দলের দুই নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অ উদয়ন গুহকে পাশে বসিয়ে প্রকাশ্যে ব্যক্তি আক্রমণ থেকে বিরত থাকার আবেদন করলেন কোচবিহার জেলা তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। আজ কোচবিহারের গোলবাগান এলাকায় দলীয় পতাকা উত্তোলন, কেক কেটে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পান করে জেলা তৃনমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
ওই কর্মসূচিতে দলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ, রাজ্য সহ সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিধায়ক উদয়ন গুহ ছাড়াও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান পার্থ প্রতিম রায়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান হিতেন বর্মণ, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আব্দুল জলিল আহমেদ, কোচবিহার পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারপার্সন মিনা তর সহ তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন জেলা স্তরের নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ বলেন, “দলের সকলকে একটাই বার্তা দিতে চাই দলে উপড়ে মমতা আর নীচে জনতা, মাঝে আমরা যারা আছি, তাঁরা আজ আছি কাল নেই। আমাদের মধ্যে মতান্তর থাকতেই পারে।কিন্তু প্রকাশ্যে ব্যক্তি আক্রমণ নয়। নিজেদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছিল, সেটা মিটে যাবে। এটাই আমি আশা করি।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ প্রায় একই সুরে বলেন, “আগামীদিনে জেলায় ভালো ফল করতে হলে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। আমি আশাবাদী আগামী পুরসভা নির্বাচনে জেলার ৬ টি পুরসভাতেই আমরা ক্ষমতায় আসব, পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের আরও ভালো ফল হবে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনে দলীয় প্রার্থী জয়ী করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা দেশের প্রধান মন্ত্রী হতে সহযোগিতা করবো।”
সম্প্রতি দিনহাটার বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটির চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ এবং দলের রাজ্য সহ সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের প্রাকশ্যে একে অপরকে আক্রমণ করার ঘটনা কোচবিহারের রাজনীতিতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। তুফানগঞ্জের নাটাবাড়িতে দলীয় এক সভায় উদয়ন গুহ নাম না করে রবীন্দ্রনাথ বাবু অ তাঁর পুত্রকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখেন। ওই ঘটনা নিয়ে জেলার তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এরপর তুফানগঞ্জের চিলাখানায় অন্য একটি সভায় উদয়ন গুহকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখতে শোনা রবীন্দ্রনাথ বাবুকে। দুই নেতার ওই আক্রমন প্রতি আক্রমণের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমেও উঠে আসে। বর্ষীয়ান ওই দুই নেতার বাকযুদ্ধে দলের কোচবিহার সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ কার্যত দিশাহীন হয়ে কোলকাতায় রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ছুটে যান। আজ কোচবিহার শহরের গোল বাগান এলাকায় দলের জেলা কার্যালয়ের সামনে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপিত হয়।
ওই কর্মসূচিতে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পরা ওই দুই নেতা সহ জেলার প্রায় সমস্ত নেতাই উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গিরিন্দ্রনাথ বর্মণ প্রাকশ্যে ব্যক্তি আক্রমণ থেকে বিরত থাকার ওই আবেদন করেন, সেই আবেদনে ওই দুই নেতৃত্ব সহ জেলার অন্যান্য নেতারা কতটা সারা দেন, সেটা সময়ই বলে দেবে।