পসকো আইনে বন্দি ছিলেন আর সেই সময় থেকে বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের দুর্গা প্রতিমা তার হাতেই শুরু হয়। তারপর বিচারে তিনি নির্দোষ খালাস হলেও ২০১৭ থেকে আজ অব্দি বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের দুর্গাপ্রতিমা তার হাতেই তৈরি হয়ে আসছে।আসলে কথা বলছি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশিহারি ব্লকের বুনিয়াদপুর শহর লাগোয়া শেরপুর এলাকার বাসিন্দা রাজু সরকারের। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে সংশোধনাগারের উঁচু প্রাচীর এর ভেতরে বাংলা তথা বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজায় সংশোধনাগারে আবাসিকদের মন খারাপ যাতে না হয় সেই কারণে প্রতিবছর দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আয়োজিত হয়। বাংলার ঘরের মেয়ে উমা কে আবাহন এর পাশাপাশি চারদিন আবাসিকের মেতে ওঠে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সংশোধনাগারের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আবাসিকদের জন্য থাকে ভুরি ভোজের আয়োজন । জানা গেছে 2017 সালে বুনিয়াদপুর শেরপুর এর বাসিন্দা রাজু সরকারের একটি পস্ক আইন মামলায় সংশোধনাগারে বন্দি জীবন শুরু হয়। আর সেই সময় কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ দুর্গাপূজা আয়োজন করবার সময় রাজু সরকার তাদের জানান তিনি নিজেই প্রতিমা গড়তে পারেন। সেই থেকে বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দীদের দুর্গতি ঘোচানোর উদ্দেশ্যে রাজু সরকার সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে শুরু করে দুর্গতিনাশিনী মূর্তি তৈরির কাজ। সেই থেকে শুরু ২০২১ সালে এসেও রাজু সরকার এখনও বানিয়ে চলেছে নীলগঞ্জের সংশোধনাগারের প্রতিমা। তার মাঝে ২০১৭ সালেই দুর্গাপূজার তিন মাসের মাথায় রাজ্য সরকার জামিনে মুক্ত হন। এরপর বিচার বিভাগের বিচারে তিনি নির্দোষ খালাসও হয়ে যান। রাজু সরকারের বিশ্বাস বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের দুর্গা প্রতিমা গড়ার ফলেই তার দুর্গতি হরণ হয়েছে। তাই তিনি নিয়ম করে বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেন। বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষও রাজু সরকারের হাতের তৈরি সুন্দর প্রতিমা পেয়ে খুশি তাই তারা প্রতি বছর বছর রাজু সরকারকে দিয়েই তাদের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের দুর্গা প্রতিমা বানান। এবছর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার এর দুর্গা প্রতিমা তৈরি হবে ডাকের সাজের। প্রতিমা থাকবে সাবেকিয়ানা। রাজু সরকারের বিশ্বাস তার মতই শতশত নির্দোষ বন্দীর দুর্গতি হরণ করবে তার তৈরি দুর্গা। আর এই বিশ্বাস নিয়ে তিনি বছর বছর তৈরি করে চলেছেন বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার এর দুর্গা।