জেএনএফ ওয়েব ডেস্ক :-একটা সময় বাংলাদেশের দিনাজপুরের রাজবাড়ির কামানের গোলা ফাটিয়ে সুচনা হত দূর্গাপূজার।সেই কামানের গগনভেদী শব্দ যখন এসে পৌছাত মানুষের কানে তখনই উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ভারত -বাংলাদেশ সীমান্তবর্ত্তী গ্রাম রাধিকাপুরের উদগ্রামে শুরু হত ৫০০ বছরের বেশি পুরোন দেবী দূর্গার বোধন পর্ব।আজ শুধু সেই সব ইতিহাস। আজ রাজা নেই, নেই রাজপাট । কিন্তু আজও যা আছে তা বিভাজিত দুই বাঙ্গের সীমান্ত চিহ্নিত করনের কাটাতারের বেড়া। ভারত-বাংলাদেশ বিভাজনের পর এই রাধিকাপুরের উদগ্রামের দূর্গা মন্দিরের নামে থাকা কয়েক বিঘা জমিও চলে গিয়েছে সীমান্তের কাটাতারের বেড়ার ওপারে বর্তমানে বাংলাদেশে। আর এপারে রয়েছে দেবীর মন্দির এবং মন্দিরের সংলগ্ন কিছু কৃষি জমি সেই জমি চাষ আবাদ করে ও ভক্তদের দানের টাকায় পূজো হয় । কিন্তু দুই বঙ্গের বিভাজন উদগ্রামের দূর্গা পূজায় কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি আজও।এবছরও গ্রামের মানুষেরা সকলে মিলে পূজার প্রস্তুতিতে মেতে উঠেছে গ্রামের মানুষ। দিনের পর দিন দেবীর ঐতিহ্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাচা টিনের ঘড়ের বদলে ভক্তের দান করা অর্থে নির্মান হচ্ছে দেবী দুর্গা পাকা ঘড়।আজও নিষ্ঠা ভাবে গ্রামবাসীদের দ্বারা উদগ্রামের মন্দিরে পূজিত হয় দেবী মৃনময়ী যা চন্ডী রুপে পূজিত হয়। সীমান্তের কাটাতারের বেড়াজাল তৈরী করলেও আজও এই শারদীয়া উৎসবে উদগ্রামের পূজা কে ঘিরে উদ্দীপনার কোন খামতি নেই গ্রামের মানুষদের মধ্যে। কামান দাগার আওয়াজ না থালেও সেই পূরনো প্রথা মেনে সময় মতো দেবী দশ ভূজার ঘট বসানো হয়। পুজোর চারটা দিন গোটা গ্রাম জুড়ে চলে নিরামিশ ভোজন। এমন কি এই চারটা দিন গ্রামের মানুষ গ্রাম ছড়ে যায় খুব কম বরং গ্রামের বাইরে বিভিন্ন কাজের যারাবাইরে থামেই তাঁরা পূজোর সময় বাড়িতে ফিরে আসেন। বছরের অন্যান সময়ে বিয়ে কি অন্যপ্রাসন থেকে শুরু করে কোন প্রকার শুভ কাজ মায়ের মন্দিরে এসে আর্শিবাদ নেওয়া না হয় ততক্ষন সেই কাজ সম্পন্য হয় না। গ্রামবাসীরা জানান যে যা মনস্কামনা নিয়ে আসে মা কাঊকে খালি হাতে ফেরত পাঠান না। দুই বাংলার কাটাতারের মধ্যে ভিভাজন হলেও দেবী দশ ভূজার পূজায় কোন খামতি রাখতে চায় না গ্রামের লোকেরা।পূজোর চারটা দিন মায়ের মন্দিরে মানুষের ঢল নামে। দেবী মৃনময়ীর মূর্তী আজ বংশ পরম্পরায়ের তৈরী করে চলেছে মৃৎশিল্পী । তাই এখন সাজো সাজো আবোহাও গ্রামে হাতে যে আর কয়েক দিন তার পরেই মায়ের বোধন । বন্যার সব দুঃখ কষ্ট কাটিয়ে এখোন গ্রামের লোকেরা পূজা প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।করোনা আবহের জন্য সরকারি নিয়ম মানা হবে পূজার দিন গুলিতে।
বাইটঃ-১)হেমন্ত দাস (পূজো কমেটির অন্যতম সদস্য )