জেএনএফ ওয়েব ডেস্ক :- ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে রাজ্যের অন্যান্য জেলার সাথে কোচবিহারেও সাংবাদিক সম্মেলন করল বিজেপি। আজ কোচবিহারে দলের জেলা কার্যালয়ে বিজেপির জেলা সভা নেত্রী মালতী রাভা রায় ওই সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি প্রথমেই অভিযোগ করে জানান, হাইকোর্টের নির্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে যে তদন্ত করেছে, তাতে জেলায় সব থেকে বেশী সন্ত্রাস যে সব এলাকায় হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন সেই সব এলাকায় কমিশনের লোকজনকে নিয়ে যায় নি। তারপরেও জেলা জুড়ে যে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের চিত্র উঠে এসেছে, সেটাই তুলে ধরা হচ্ছে।
বিজেপি জেলা সভানেত্রী তথা বিধায়িকা মালতি রাভা অভিযোগ করে জানান, ২ মে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরে তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতিদের তাণ্ডবে কোচবিহার জেলাতেই ৬ জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন। ৩৮ জন কর্মী গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। দলের মহিলা কর্মী সমর্থকদের শ্লীলতাহানি এমনকি ধর্ষণ পর্যন্ত করা হয়েছে। বিজেপি করার অপরাধে অসংখ্য মানুষের বাড়িঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। বহু মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে বাড়ি ছাড়া হয়েছিলেন। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত বহু বিজেপি কর্মীদের কাজ থেকে বেড় করে দেওয়া হয়েছে। নিজের জমিতে চাষ করতে দেওয়া হচ্ছে না। হাজার হাজার চাঁদা আদায় করা হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, করোনা ভ্যাক্সিন দেওয়ার ক্ষেত্রেও বিজেপি কর্মীদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।
একই ভাবে পুলিশ প্রশাসন রাজ্যের শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। বিজেপি কর্মীরা খুন হলেও তা খুনের মামলা হিসেবে নথি ভুক্ত করা হচ্ছে না। বিজেপি কর্মীরা সন্ত্রাসের শিকার হয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে সহায়তা মিলছে না। অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টে বিজেপি কর্মীদের নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে তাঁদের দিনের পর দিন জেলে আটকে রাখা হচ্ছে বলে এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন বিজেপির বিধায়িকা মালতি রাভা।
মানবাধিকার কমিশন কোচবিহারে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের জন্য তৃণমূল কংগ্রেসের যে সব নেতৃত্বকে দায়ি করেছে তাঁদের নামও এদিন উল্লেখ করেন বিজেপি বিধায়িকা। তিনি জানান, যে সব দুষ্কৃতিদের নাম উঠে এসেছে তার মধ্যে দিনহাটায় প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন গুহ ছাড়াও প্রাক্তন কাউন্সিলার জয় ঘোষ, তৃণমূলের মহিলা নেত্রী মৌমিতা ভট্টাচার্য, শীতলখুচিতে বলেন রায়, সহিদুল মিয়াঁ এবং আলি হোসেন মিয়াঁ, সিতাইয়ে রমণী বর্মণ, বেণু বর্মণ, মহেশ বর্মণ, তুফানগঞ্জে খলিল শেখ, জয়নুল হক, কাশেম আলি ও কমল মোদক, কোচবিহার কোতোয়ালিতে সুভাস বর্মণ, বাবাই বর্মণ, চিত্তরঞ্জন বর্মণ। তৃণমূল কংগ্রেসের এই সব দুষ্কৃতিদের নেতৃত্বে এখনও সন্ত্রাস চলছে বলে দাবী করেন বিজেপি নেত্রী মালতি রাভা।
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিজেপি এই সাংবাদিক সম্মেলনকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁরা আগেই জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গুলি হেলনে কাজ করছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই কমিশন তাঁদের রিপোর্টকে আদালতের কাছে জানানোর আগেই জনসমক্ষে নিয়ে এসেছে।