জেএনএফ ওয়েব ডেস্ক : রাস্তা তৈরির জন্য বরাদ্দ হয়েছে টাকা। বসেছে সরকারি বোর্ড। কিন্তু তৈরি হয় নি রাস্তা। খোদ ঝাড়গ্রামের জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের এলাকায় রাস্তা তৈরি না হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গত পাঁচ মাস ধরে এরকম অবস্থায় পড়ে থাকার জেরে যাতয়াতের ক্ষেত্রে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁধগোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঠচাঁড়া-দামোদরপুর সংসদের কুনামডাঙা গ্রামের মানুষজনের। জমির আল পথ দিয়ে হেঁটে যেতে হয় বাসিন্দাদের। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই যাতয়াতে অসুবিধা বাড়ে। ঢোকে না কোন গাড়ি। রাত-বিরেতে গ্রামের কেউ অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে নিয়ে আসতে হয় খাঁটিয়া করে। সমস্যা থেকে কবে মুক্তি পাবে সে দিকেই তাকিয়ে গ্রামের ছা-পোষা মানুষগুলো। কাঠচাঁড়া-দামোদরপুর সংসদেই বাড়ি ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধক্ষ্য শুভ্রা মাহাতোর বাড়ি।
ঝাড়গ্রাম ব্লকের বাঁধগোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কাঠচাঁড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কুনামডাঙা গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মিটার রাস্তা অবস্থা এরকম। দীর্ঘকাল ধরে রাস্তাটি এরকম থাকলেও গ্রামের মানুষজন আশার আলো দেখেছিলেন চলতি বছরের ফ্রেবুয়ারি মাসে। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের উদ্যোগে এই রাস্তাটি তৈরির করার জন্য টেণ্ডার করা হয়। রাজ্যের তহবিল থেকে ২০১৯-২০২০ অর্থবর্ষে রাস্তাটি তৈরি করার জন্য বরাদ্দ করা হয় ৩২ লক্ষ ৫১ হাজার ৭৬৫ টাকা। রাস্তা তৈরির কাজ শুরুর তারিখ হিসেবে চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি লেখা রয়েছে সরকারি বোর্ডে। কাজের বরাত পেয়েছে বাঁকুড়া জেলার একটি কো-অপারেটিভ সংস্থা। কুনামডাঙা গ্রামের প্রায় ২০টি আদিবাসী পরিবারের বসবাস। গ্রামের মানুষজন চাষবাস ও মজুরি করে দিন গুজরান করেন। গ্রামের বাসিন্দা চন্দ্রমোহন বেশরা বলেন, ‘‘আমরা জন্ম থেকে এই জমির আল রাস্তা দেখে আসছি। এবারে হয়তো ভেবেছিলাম আমাদের যাতায়াতের জন্য নতুন রাস্তা তৈরি হবে। পাঁচ মাসে আগে সরকারি বোর্ড ও এক গাড়ি বালি পড়লেও এখনও কোন কাজ শুরু হয়নি।’’ কিষান হাঁসদা বলেন,‘‘সবচেয়ে সমস্যায় পড়ি বৃষ্টি হলে আর রাতে কোন রোগীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হলে। তখন খাঁটিয়ায় চাপিয়ে নিয়ে যেতে হয়।’’ সমস্যার কথা স্বীকার করে কাঠচাঁড়া-দামোদরপুর সংসদের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য বৈদ্যনাথ কিস্কু বলেন,‘১০ ফুট চওড়া ৭০০মিটার ঢালাই রাস্তা ও তিনটি কালভার্ট তৈরির জন্য সরকারি বোর্ড লাগানো হয়েছিল পাঁচ মাস আগে। কাজ বলতে শুধু এক গাড়ি বালি পড়েছে। আর কিছুই হয়নি। বিষয়টি আমরা ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধক্ষ্যকে জানিয়েছি কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি।’’কেন রাস্তার কাজ শুরু হল না তা নিয়ে ধন্দে গ্রামবাসীরা।