জেএনএফ ওয়েব ডেস্ক : বিশ্ব র্যাকিংয়ে জায়গা করে নিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। ‘ওয়ার্ল্ড সায়েন্টিস এণ্ড ইউনিভারসিটি র্যাকিং-২০২১’ এর তালিকায় প্রথমবার স্থান অর্জন করতে পেরেছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। তাও আবার এক বা দু’জন নয়। একসঙ্গে ৩৪ জন অধ্যাপক-বিজ্ঞানীর এহেন স্থান অর্জন করায় খুশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। এর ফলে আধুনিকতার নিরিখে কয়েক কদম এগিয়ে গেল বিদ্যাসাগরের ধাত্রীভূমি মেদিনীপুর। আশির দশকে মেদিনীপুরের মত প্রত্যন্ত এলাকায় রুক্ষ মাটিতে স্থাপিত হয় বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। বয়সের দিক থেকে অনেকটা নবীন হলেও আগামী দিনে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে ‘প্রস্তুত’ তাঁরা। ‘স্মার্ট ক্যাম্পাস’ তৈরি থেকে বিশ্ব র্যাকিংয়ে জায়গা করে নেওয়ার নেপথ্যে বিজ্ঞানীরা কৃতিত্ব দিচ্ছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীকেই।
‘ওয়ার্ল্ড সায়েন্টিস এণ্ড ইউনিভারসিটি র্যাকিং-২০২১’ কী? জানা গিয়েছে, প্রতি বছর সারা বিশ্বের সমস্ত বিজ্ঞানীদের গবেষণামূলক কাজকর্ম দেখে গুগুলের মাধ্যমে তার মান যাচাই করে বিশ্বজুড়ে একটি র্যাকিং এর তালিকা প্রস্তুত করা হয়। সারা বিশ্বের পাশাপাশি মহাদেশ গুলির মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের স্থান কোথায় তা সহজেই জানা যায় ‘এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্সে’র ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। গত দু’মাস ধরে বিশ্বে গুগুলের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে বিজ্ঞানীদের এই র্যাকিং এর তালিকা প্রস্তুত করা হয়।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ৩৪ জন বিজ্ঞানী বিশ্ব র্যাকিং-র তালিকায় স্থান পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে প্রথম স্থানে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল বিভাগের বিজ্ঞানী দেবীদাস ঘোষ, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন গণিত বিভাগের বিজ্ঞানী মধুমঙ্গল পাল, তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন বোটানি বিভাগের বিজ্ঞানী অমলকুমার মণ্ডল। এছাড়াও ঝাড়গ্রামের সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য তথা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের বিজ্ঞানী অমিয়কুমার পাণ্ডা সহ মোট ৩৪ জন অধ্যাপক-বিজ্ঞানী। দেশ নয় এশিয়া মহাদেশের নিরিখে বিজ্ঞানী দেবীদাস ঘোষ ৬২১২ তম, বিজ্ঞানী মধুমঙ্গল পাল ৬৩৯২ তম, বিজ্ঞানী অমলকুমার মণ্ডল ৮৯০৬ তম স্থান অর্জন করেছেন।
বিদ্যাসাগরের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করা বিজ্ঞানী দেবীদাস ঘোষ বলেন,‘বিশ্ব র্যাকিংয়ে ফ্যাকাল্টিদের প্রথমবার স্থান অর্জন করেছে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। এটা শুধু আমার অ্যাক্টিভিটি নয় সমস্ত স্কলার এবং মাননীয় উপাচার্যের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হত না। উপাচার্য সব সময় আমাদের বিভিন্ন ভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সাহায্য করেছেন। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ জন একসঙ্গে বিশ্ব র্যাকিংয়ে ঢুকতে পেরেছে এটা খুবই আনন্দের।’ তৃতীয় স্থান অর্জন করা বিজ্ঞানী অমলকুমার মণ্ডল বলেন,‘পিছিয়ে পড়া জঙ্গলমহলে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একসঙ্গে ৩৪ জন অধ্যাপক-বিজ্ঞানী স্থান অর্জন করা খুবই গর্বের বিষয়। কোভিড-লকডাউনের মধ্যে মনে হল যেন সুবাতাস! আমরা কৃতজ্ঞ উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর মহাশয়ের কাছে।’
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন,‘আপাত দৃষ্টিতে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়কে মনে করা হয় পিছিয়ে পড়া জায়গার পিছিয়ে পড়া বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা মডেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করেছি। একটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৩৪ জন অধ্যাপক বিশ্ব র্যাকিংয়ে তালিকায় স্থান অর্জন করার জন্য তাঁদেরকে সহ সকল অধ্যাপক-গবেষক-পড়ুয়া-শিক্ষাকর্মীদের আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। পাঁচ বছর আগে আমি একটা কর্মসূচি নিয়েছিলাম একজন শিক্ষক একটি গবেষণা প্রকল্প। সবাইকে আমি উৎসাহিত করেছিলাম গবেষণা প্রকল্প নিয়ে আসার জন্য। যার ফল পাওয়া গেল, তাতে আমি খুবই আনন্দিত।’