জেএনএফ ওয়েব ডেস্ক : বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ট্রেনে তুলে দিল্লি যাওয়ার পথে দুই কিশোরী সহ চার জনকে উদ্ধার করল রেল পুলিশ। ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। আজ নিউ কোচবিহার স্টেশনে দিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন থেকে ওই চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরপিএফ ধৃত মহিলার বিরুদ্ধে হিউম্যান ট্রাফিকিং আইনে মামলা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ওই ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তা তদন্ত বের করার চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছে।আরপিএফের নিউ কোচবিহার স্টেশনের আধিকারিক রবি কুমার জানিয়েছেন, উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে রয়েছেন রেবিকা সাগর (১৭), সরস্বতী বরো (১৬), গণেশ লোহার (১৮) ও নিরঞ্জন টান্টি (১২)। এদের প্রত্যেকের বাড়ি অসমের উদালগুড়ি জেলায়। এদের পাচার করার চেষ্টায় অভিযুক্ত বনিতা টান্টি নামে ৩১ বছরের এক মহিলাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দিল্লি গামী ওই রাজধানী এক্সপ্রেসে হিউম্যান ট্রাফিকিং হচ্ছে বলে এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিকের কাছ থেকে নির্দেশ পান নিউ কোচবিহার স্টেশনের আরপিএফ আধিকারিক রবি কুমার। এরপরেই তল্লাশির কাজ শুরু হয়। কিন্তু প্রথম দিকে কোন মতেই বুঝতে পারা যাচ্ছিল না। নিউ কোচবিহার স্টেশনের ৫ নম্বর প্ল্যাট ফর্মে ট্রেনটি ঢুকতে যাচ্ছে জেনে রবি কুমার বিশাল বাহিনী নিয়ে ওই ট্রেনে উঠে পরেন। অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রথমে রেবিকা সাগর নামে একটি মেয়ে আরপিএফ আধিকারিকদের জানায়, বনিতা টান্টিকে তাঁরা চেনেন না। দুদিন আগেই তাঁর সাথে কথা হয়েছে। এদিন বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে তাঁদের ট্রেনে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এরপরেই পুলিশ বুঝতে পারে, এই ঘটনা হিউম্যান ট্রাফিকিংয়ের ঘটনা। সাথে সাথে তাঁদের সেখানে নামিয়ে নেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই আরপিএফের আধিকারিকরা বিষয়টি নিয়ে নিউ কোচবিহারের জিআরপি থানায় যেমন জানিয়েছেন, তেমনি অসমের ওদলাগুড়ি জেলার পুলিশ সুপারের সাথেও কথা বলে বলে রবি কুমার জানিয়েছেন।
আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা অসমের বিভিন্ন গ্রামের মানুষদের কাজ দেওয়ার প্রলোভন সহ নানা ভাবে পাচার করে দেওয়ার চক্র দীর্ঘদিন থেকেই সক্রিয়। এক সময় এরাজ্যের সীমান্ত গ্রাম গুলি থেকেও ব্যাপক ভাবে মানব পাচার চলত। বর্তমানে প্রশাসনিক তৎপরতা ও বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তৎপরতায় এরাজ্যে মানব পাচার চক্র আর সেভাবে সক্রিয় হয়ে উঠতে পারছে না। কিন্তু অসমে যে ওই চক্র এখনও সক্রিয় তা এদিনের ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠল।