ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক : আমাদের সরকার সব কিছু করেছে আর বিজেপি সরকার কিছু করে না। শুধু হামলা করে আর কুৎসা করে। বাইরের থেকে একগাদা নেতামন্ত্রী নিয়ে আসছেন। আমফান, মাওবাদী সময়, মানুষ মারা যাওয়ার সময়, হাতির হামলায় মানুষের প্রাণ গেলে ওদের টিকি দেখা যায় না। আর নির্বাচনের সময় এসেছে টাকা বিলাতে আর মিথ্যা কথা বলতে। ওদের বলে দিন, আর বিদায় দিন। মানুষকে বাঁচতে দিন। ধান্দা বাজ, দাঙ্গাবাজ বিজেপিকে চাই না। বুধবার ঝাড়গ্রাম এর তৃনমূলের প্রার্থী বিরবাহা হাঁসদা ও বিনপুরের প্রার্থী দেবনাথ হাঁসদার সমর্থনে লালগড়ের নির্বাচনী জনসভা থেকে বিজেপিকে এভাবেই আক্রমন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার গোপীবল্লভপুর এবং লালগড়ে মানুষের জনজোয়ার।ঝাড়গ্রাম জেলার দুটি প্রত্যন্ত এলাকার আদিবাসী সহ সাধরাণ মানুষের জনপ্লাবন প্রমান করে দিল জঙ্গলমহল মমতার পাশে আছে। তিনি বললেন,’আমার উপর ভরসা রাখুন। বিজেপি সব দখল করে নেবে। আমি জঙ্গলমহলের মানুষদের ত্রিশ হাজার চাকরি দিয়েছি।সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল,বিশ্ববিদ্যালয়, স্টেডিয়াম,কলেজ,আইটিআই,কিষান মান্ডি সেতু সব আমি করে দিয়েছি। যখন জঙ্গলমহলে বিজেপির জেপি নাড্ডা ,অমিত সাহ,শুভেন্দু অধিকারীদের মিছিল,সভায় মানুষের উপস্থিত নেই,বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতাদের সভা বতিল করতে হয়েছে। সেই জায়গায় মমতা বন্দ্যোবাধ্যায় মাত্র দুটি বিধানসভায় মিটিং করে জঙ্গলমহলের হাওয়া যে ঘুরে গিয়েছে তা দেখিয়ে দিয়ে গেলেন। গোপীবল্লভপুর থেকে লালগড় জনজোয়ারে ভেসে গেল। তিনি বলে গেলেন,’ তৃণমূলের উপর আস্তা রাখুন। তৃণমূলই আপনাদেরকে দেখে রাখবে। বিজেপি লুট করবে।’ এদিন বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর বিধানসভার বাহারুনা এবং ঝাড়গ্রাম বিধানসভার অন্তর্গত লালগড় ভিলেজ মাঠে চার প্রার্থীর হয়ে প্রচার জনসভায় মমতা ম্যাজিক আবারও কাজ করল।মুখ্যমন্ত্রীর ভাষন শোনার জন্য দলে দলে মানুষ ভীড় জামিয়েছিল দুটি সভাতেই।লালগড় ভিলেজ মাঠে এবং বাহারুনাতে মুখ্যমন্ত্রী যখন পৌছালেন তখন মাঠে উপচে পড়া ভীড়।মমতা বন্দ্যোপাধ্যের বক্তব্য শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত শুনলেন মানুষ।উল্লেখ্য ফেব্রুয়ারী মাসের নয় তারিখ লালগড়এর এই মাঠে সভা করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। যেখানে মানুষের উপস্থিতি ছিল নেহাত কম।নাড্ডার ভাষনের সময় মানুষ জন উঠে চলে গিয়েছিলেন।ওই দিনই লোক না হওয়ায় ঝাড়গ্রামের সভা বাতিল করেছিলেন। অন্যদিকে পনেরো মার্চ ঝাড়গ্রামের সার্কাস ময়দানের সভা বাতিল করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সভাতেও লোক তেমন ছিল না। তার মোবাইলে ভাসনের সময় মানুষ উঠে চলে গিয়েছিলেন।ঝাড়গ্রাম মুখ্যমন্ত্রীর হাতের তালুর মতো চেনা। এক সময় অনুন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু ঝাড়গ্রাম জেলার বেলাপাহাড়ি থেকে শুরু করে লালগড় সর্বত্র ছিল তার যাতায়াত ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বক্তব্যে মনে করিয়ে দেন কি ছিল ঝাড়গ্রাম।বর্তমানে এই তৃণমূল সরকারের আমলে জেলায় সুপারস্পেশালিটিহাসপাতাল, আইটিআই,সেতু,বত্রিশ হাজার কর্মসংস্থান,মন্দির সংস্কার,ভাষার স্বিকৃতি,কুড়মি ডেভলপমেন্ট বোর্ড,বিনা মূল্যে চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য সাথী কার্ড,তপশিলি জাতির মানুষ দের জন্য ভাতা,কৃষি বিমা,সবাই পাচ্ছেন চাল সহ সমস্ত ক্ষেত্রে ঢালাও উন্নয়ন হয়েছে।এবার থেকে চারমাসে দুয়ারে প্রশাসন হবে। আঠারো বছরের উপরের বিধবারা সবাই বিধবা ভাতা পাবে,এক কোটি ছেলে মেয়ে সবুজ সাথী পেয়েছ,দ্বাদশ শ্রেনীর পড়ুয়ারা দশ হাজার টাকা করে পাবে ট্যাব বা স্মার্ট ফোন কেনার জন্য,মাটির সৃষ্টি প্রকল্পে ১৪ হাজার একরের উপর কাজ হবে,আরো দশ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি হবে,দুশো আদিবাসী মাধ্যমে স্কুল হবে,ইংরেজি মাধ্যাম স্কুল হবে। এই ভাবে তৃণমূল সরকারই একমাত্র সর্বস্তরের মানুষের জন্য কাজ করতে পারে তা বুঝিয়ে দিয়ে গেলন তিন।পাশাপাশি বিজেপি পরিচালিত রাজ্য গুলিতে কি ধরনের দুঃশাসন চলছে তা তিনি তুলে ধরেন। এদিন সভায় আগত মানুষ জন ছত্রে ছত্রে অনুভব করেছেন রাজ্যে দরকার তৃণমূল সরকারই।এদিন বেলপহাড়ির প্রত্যন্ত সন্দাপাড়া অঞ্চেলের সীতাপুর গ্রাম থেকে এসেছেন বৈদ্যনাথ মুর্মু।সভা শেষে তিনি বলেন “দিদিই থাকবেন আমাদের।দিদির কাছ থেকে সব কিছুই পেয়েছি। দিদি থাকলেই আমরা সন্তুষ্ট।আজকের সভায় ভীষন ভীড় হয়েছে।” সভায় এসেছিলেন রীতা মান্ডি। তিনি বলেন “ দিদির উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে বার বার দিদিকে ফিরিয়ে আনব।”এদিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিটি বাক্যের পরেই একটাই ধ্বনী উঠিছিল“ খেলা হবেই।” মুখ্যমন্ত্রীও মা,বোনেদের হাতা খুন্তি নিয়ে খেলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন।