ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক : চার বছর বিনা পয়সায় পড়িয়েছেন। স্কুলের প্রতিষ্ঠার পর সরকারি অনুমোদন নিয়ে এসেছেন। এবারে ঝাড়গ্রাম জেলায় এহেন প্রচার বিমুখ শিক্ষিকার হাতে তুলে দেওয়া হল রাজ্য সরকারের শিক্ষারত্ন পুরস্কার। তিনি হলেন ইলা মান্না। ৫৯ বছর বয়সী ইলা মান্না ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রামের বড়খাগড়ি অঞ্চল জনকল্যাণ বিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের সহ-শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাঁর বাপের বাড়ি জেলারই সাঁকরাইল ব্লকের মানগোবিন্দপুর গ্রামে।
মেদিনীপুরের রাজা নরেন্দ্রনাল খান অর্থাৎ গোপ কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে বায়ো-সায়েন্সে বিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর ১৯৮৩ সালে বড়খাগড়ি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। তখনও স্কুলের সরকারি অনুমোদন ছিল না। স্বাভাবিক ভাবেই বেতনও পেতেন না। বিনা পারিশ্রমিকে চার বছর পড়িয়েছেন। অবশেষে জুনিয়ার হাইস্কুলের তকমা লাভ করে ১৯৮৬ সালে। তারপর সেই পথ পেরিয়ে আজ উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে রূপান্তরিত হয়েছে স্কুলটি। নয়াগ্রামের মুড়াকাটি গ্রামের শিক্ষক রজনীকান্ত মান্নার সঙ্গে বিয়ে হন ইলাদেবীর। তাঁর স্বামী বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। ইলাদেবী শুধুমাত্র জীববিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসেবেই নয় আদিবাসী অধ্যুষিত এই এলাকার পড়ুয়াদের খেলাধুলার জন্য সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই স্কুল থেকেই পড়াশুনা করে মনিকা সরেন ও সুপর্ণা সিং তিরন্দাজিতে আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের উন্নীত করতে পেরেছেন। আগামী ডিসেম্বর মাসেই শিক্ষিকা ইলা মান্না অবসর নেবেন শিক্ষকতার জীবন থেকে। তাঁর আগে জীবনের পড়ন্ত বেলায় শিক্ষারত্ন পাওয়ায় কার্যত খুশি ও আপ্লুত তিনি। এদিন তাঁর হাতে রাজ্য সরকারে সেই মানপত্র ও পুষ্পস্তবক তুলে দেওয়া হয়। সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে প্রচার বিমুখ শিক্ষিকা ইলা মান্নার সঙ্গে দেখা করে আসেন নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্চিতা ঘোষ।