ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক : ভিড় এড়ানোর জন্য কিষাণমাণ্ডিতে সব্জী, মাছ ও ফল বাজার নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু এতে কি সত্যি ভিড় এড়ানো সম্ভব? প্রশ্নটা তুলছেন ব্যবসায়ী থেকে শহরের বাসিন্দারা। স্থায়ী দোকানদারদের বক্তব্য,‘ঝাড়গ্রাম শহরের পাঁচমাথা মোড় থেকে সুভাষ পার্ক মোড়, রেল স্টেশন হয়ে সব্জী বাজারের মধ্য দিয়ে উড়ালপুল পর্যন্ত যে সব্জী ও ফলের স্থায়ী দোকান এবং ভেতরে যতগুলি স্থায়ী মাছ দোকান রয়েছে সেই পরিমাণ জায়গা কিষাণমাণ্ডিতে নেই। যার ফলে সবাইকে কিষাণমাণ্ডিতে তুলে নিয়ে গেলে বসার জায়গা মিলবে তো?’ উল্টে সেখানে একটি ঘেরা জায়গার মধ্যে ভিড় আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন শহরের বাসিন্দারাও। কন্টেইমেন্ট জোন ঘোষনার পর থেকে বাজার বন্ধ রয়েছে। এর ফলে যত্রতত্র ঝাড়গ্রাম শহরের মধ্যে বড় বড় ফাঁকা জায়গা গুলিতে বেশ কিছু চাষি ও ফুটপাথে ব্যবসা করা সব্জী বিক্রেতারা বসে পড়ায় চিন্তা ও উদ্বেগ বাড়িয়েছে শহরবাসীর মধ্যে। কারণ আচমকা সেই জায়গা গুলিতে সকাল হলে বসে পড়ছে বিভিন্ন এলাকার মানুষজন। আচমকা ফুটপাথে দোকান বিছিয়ে দেওয়ায় পুলিশও আগাম বুঝে উঠতে পারছেন না। স্বাভাবিক ভাবে সেই জায়গা গুলিতে ভিড় জমছে। শহরবাসীর বক্তব্য,‘ঝাড়গ্রাম শহরের একেবারে মাঝখানে রয়েছে বাজার। যার ফলে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মানুষজন সেখানে এসে বাজার করেন। যদি কিষাণমাণ্ডিতে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে রঘুনাথপুর, পুরাতন ঝাড়গ্রাম, রাজ কলেজ কলোনি, সত্যবানপল্লীর ঘোড়াধরার বাসিন্দাদের অনেকটা পথ পেরিয়ে খুচরো বাজার করতে যেতে হবে। যা কিনা ঝাড়গ্রামের মত শহরের একেবারে অস্বাভাবিক। কারণ ঝাড়গ্রামে শহর সার্ভিস বাস বা অটো চলে না। যে সমস্ত টোটো গুলি চলে তারা উড়ালপুল পার হতে গেলেই নির্ধারিত ভাড়া থেকে অতিরিক্ত ২০ টাকা আরো বেশি ভাড়া নেয়।’ যার ফলে বাজার করতে এসে যাতায়াতের জেরে পকেট ফাঁকা হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন শহরের বাসিন্দারা। সোমবার ঝাড়গ্রামের সব্জী ব্যবসায়ীরা কিষাণমাণ্ডিতে চাষিদের অনেক বুঝিয়ে নিয়ে গেলেও বিক্রি না হওয়ায় অনেক চাষি জিনিসপত্র গুটিয়ে বাড়ি ফিরে চলে যায়। আর যে সব চাষি জিনিস নিয়ে বসেছিলেন তাঁরা জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেন। অন্যদিকে, মাছ ব্যবসায়ীরা সোমবার ঝাড়গ্রাম শহরে কোন মাছ গাড়ি ঢুকতে দেয়নি। মাছ ও ফল ব্যবসায়ীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন স্থায়ী দোকান না খুলতে দিলে ব্যবসা আপাতত বন্ধ রাখবেন। সব্জী, ফল ব্যবসায়ীদের বক্তব্য,‘আমাদের দোকান গুলির সামনে ৩০ ফুটের অধিক চওড়া রাস্তা রয়েছে। এখানে ফুটপাথে কোন দোকান বসতে না দিলে ভিড় হবে না। প্রশাসন শুধু আমাদের উঠে যেতে বলছে কিষাণমাণ্ডিতে। কিন্তু জুবলি মার্কেটের যে দোকান গুলো রয়েছে সেগুলি ওঠাতে পারবে কি? জুবলি মার্কেটের ভেতরে রাস্তাও ঘিঞ্জি। দু’জন ভালোভাবে হাঁটা যায় না। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার এখনও পর্যন্ত দু’বার জুবলি মার্কেট বন্ধ করল সেখানকার ব্যক্তিদের করোনা পজেটিভ ধরা পড়ার জেরে।’ বাজার এলাকায় শুধুমাত্র সাতদিন কন্টেইমেন্ট জোন করে নয় বাস্তবিক বিকল্প পথ খোঁজা উচিত প্রশাসনের। নাহলে আগামী দিনে সাধারণ মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের যেমন সংকট দেখা দেবে তেমনি কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কালোবাজারি করার সুযোগ খুঁজবে। যার জেরে কার্যত মাথায় হাত পড়বে আমজনতার!