ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক : সমাজবন্ধু শ্মশান কর্মীদের ‘অস্পৃশ্যতা’ করে রাখার কৌশলে সমাজকে কি অন্ধকারের পথেই ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ? এই প্রশ্নটা এখন উঠতে শুরু করেছে খোদ ঝাড়গ্রাম শহরে। শুক্রবার রাতে করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধাকে দাহ করে এখন ঘরে ঢুকতে পারছেন না ঝাড়গ্রাম পুরসভার দুই শ্মশান কর্মী। তাঁরা ঝাড়গ্রাম পুরসভার তালতলা শশ্মানের বৈদ্যুতিক চুল্লির দু’জন শশ্মান কর্মী। করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধাকে দুই শশ্মান কর্মী সৎকার করতে যাওয়ার খবর জানার পর এলাকাবাসীরা দুই যুবককে ১৪ দিন বাড়ির বাইরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এহেন কাজের পিছনে কিছু মানুষের উসকানি মূলক কাজকর্মও নজরে এসেছে পুলিশ-প্রশাসনের। করোনা যোদ্ধা হিসেবে প্ৰথম সারিতে থেকে লড়াই করে যাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী-পুলিশ কর্মী-এম্বুলেন্স কর্মী-সাফাই কর্মী-শশ্মান কর্মীরা। এনারাই একেবারে সামনের থেকে দাঁড়িয়ে লড়াই করে সমাজকে সুস্থ করে তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আর তাঁরাই যখন সমাজের কাছে ‘অপমানিত’ হন তা হয়ে উঠে চূড়ান্ত অমানবিকতা ও লজ্জাজনক ব্যাপার সভ্য সমাজে। এনারা যদি নিজেদের কাজটুকু বন্ধ করে দেন তাহলে সমাজ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে ভেবে দেখেছেন কেউ একবার! তাই কাউকে উস্কানি দিয়ে কৌশলে সমাজকে অন্ধকারের পথেই কি ঠেলে দিচ্ছেন না তো ? প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তি মারা যাওয়ার ৪ ঘন্টা পর তার দেহ সৎকার হচ্ছে। ততক্ষনে ওই মৃত ব্যক্তির শরীরে থাকা ভাইরাস মারা যায়। এছাড়াও কোন ব্যক্তিকে যখন পোড়ানো হয় তখন প্রায় ৪০০-৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকে। ওই সময় সম্পূর্ণ পিপিই কিট পরে যাঁরা দাহ করেন তাঁদের শরীরে ভাইরাস প্রবেশের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরাও। ঝাড়গ্রাম পুরসভার প্রশাসক তথা মহকুমা শাসক সুবর্ণ রায় বলেন,‘বর্তমান সময়ে বৈতরণী পার যাঁরা করছেন তাঁরা সাক্ষাৎ ভগবান। নিজেরা এগিয়ে এসে এই কাজ না করলে সমাজে কোন পথে যাবে ভাবতে পারছেন? কিছু লোক বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা তাঁদের উপর নজরদারি রেখেছি। এভাবে কাউকে উস্কানি দিয়ে সমাজকে ভুল পথে পরিচালিত করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মানুষের মধ্যে যাতে আতঙ্ক না ছড়ায় তার জন্য সমাজবন্ধু দুই শ্মশান কর্মীকে আলাদা ভাবে রাখার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ করোনার থেকেও বড় অসুখ হচ্ছে মানুষের ভয়। তাই অযথা ভয় পাবেন না। সতর্ক থাকুন। সুস্থ থাকুন।’