Breaking
1 Nov 2024, Fri

সেনা শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে তমলুকে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্রের উদ্যোগে ইন হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প

ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক : না কোনো আড়ম্বর ছিলো না ,ছিলো না সংগঠনের ফ্লেক্স, লাঞ্চ প্যাকেট তো দূরের কথা কোন দামী গিফটওও ছিল না , তবুও মানবিকতার পরিচয় দিয়ে করোনা সংকটের মধ্যেও মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে তমলুক জেলা হাসপাতালে বুধবার ১৭ই জুন ইন হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পে ১৭ জন রক্তদান করলেন। তমলুক ব্লাডব্যাংকে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্রের তৃতীয় ইন-হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পের মাধ্যমে সীমান্ত সংঘর্ষে নিহত বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এই শিবিরে ১৭ জন রক্তদাতা রক্ত দান করেন।

“জীবনের জন্য রক্তদান” এই মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মেদিনীপুর কুইজ কেন্দ্র সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি লকডাউনের সংকটকালে ব্লাড ব্যাংক গুলোতে সামর্থ্য মতো রক্তের যোগান দেবার সংকল্প নিয়ে ইন হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প শুরু করেন। ‘ ইন হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প’ সরকারী ভাষাটা অনেকটা এরকম ক্যাম্প না করে সংঠনগত ভাবে উদ্যোগ নিয়ে সরাসরি ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে রক্তদান করা। সংস্থার পক্ষ থেকে প্রথমবার ২৮ মে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের ব্লাড ব্যাংকে ইন হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প সূচনা করেন। ওইদিন রক্তদান করেন ১ জন মহিলা সহ মোট ১২ জন রক্তদাতা। এরপর দ্বিতীয় পর্বের ইনহাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প হয়েছিল সংস্থার হলদিয়া শাখার উদ্যোগে হলদিয়া ব্লাড ব্যাংকে। সেদিন ১১ জন রক্তদাতা রক্ত দান করেন। এরপর সংস্থার উদ্যোগে বুধবার তমলুক ব্লাড ব্যাংকের মাধ্যমে এদিন ইন হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প দিন স্থির করা হয় । আজ ১৭ জন রক্ত দান করেন।১৭জনের মধ্যে ৩ ইউনিট রক্ত তমলুক হাসপাতালের ৩ জন রোগীর পরিবারকে সরাসরি তুলে দেওয়া হয় ব্লাডব্যাংকের মাধ্যমে। লকডাউন সময়কালে সংস্থার পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পের আয়োজন না করে এইভাবে ইন হাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্পের মাধ্যমে সদস্য ও শুভানুধ্যায়ীরা এভাবে রক্ত সরাসরি দিয়ে চলেছেন।

সংস্থার অন্যতম কর্ণধার তথা প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক “,স্বপ্নের ফেরিওয়ালা” মৌসম মজুমদার বলেন, “সাধারণত যে ধরনের রক্তদান শিবির হয়ে থাকে ইনহাউস ব্লাড ডোনেশন ক্যাম্প একটু আলাদা প্রকৃতির। সরাসরি ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে রক্ত দান করা। আমাদের সংস্থার উদ্যোগে লকডাউন কালে আগের দুটো শিবিরে মেদিনীপুর১২ জন ও হলদিয়ায় ১১জন রক্ত দিয়েছিলেন।আজ আমাদের ১৫ জনের লক্ষ্য মাত্রা নিয়ে ব্লাড ব্যাংকে দিন নথিভুক্তকরণ করেছিলাম ।১৭ জন রক্ত দিলেন, এবং বেশ কয়েকজন রক্ত দিতে পারলেন না। তাই বাধ্য হয়ে আবার জুলাই মাসে একটা শিবিরের দিন বুক করলাম ব্লাড ব্যাংকে ।একজন মহিলা স্বেচ্ছায় এগিয়ে এলেন কিন্তু শারীরিক কারণে দিতে পারলেন না। কিন্তু আমাদের এই নতুন লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা দিয়ে গেলেন। শুধু তাই নয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র বাবা মাকে লুকিয়ে, পরিবারের কাউকে না জানিয়ে রক্তদান করে গেল। আমাদের চোখ খুলে দিয়ে গেল। পাশাপাশি বার্তা দিয়ে গেল, যুব সমাজের মানসিকতা বদলে যাচ্ছে, তারা সবাই উপহারের জন্য তারা রক্ত দেয় না। তারা মানবিকতার পরিচয় দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তৈরি।” সংস্থার পক্ষ থেকে আরো জানা যায়, চতুর্থ ইনহাউস রক্তদান শিবির কাঁথিতে করার পরিকল্পনা রয়েছে। এদিন কুইজ কেন্দ্রের আহ্বানে সাড়া ‌দিয়ে সংস্থার শুভানুধ্যায়ীরা যেমন রক্তদিয়েছেন তেমনি কুইজ কেন্দ্রের সদস্যরাও রক্ত দিয়েছেন। এদিন রক্তদান শিবিরে রক্ত,।দাতাদের উৎসাহিত করতে প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড.মৌসম মজুমদার,সংগঠনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসাদ ঘড়া,অরুণ কুমার সাউ,অলক গাঁতাইত,চন্দন মন্ডল,অলোক মাইতি, কমলিকা সামন্ত, সৌমেন গায়েন সহ অন্যান্য সংগঠকগণ। কুইজ কেন্দ্রের পক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক সুজন বেরা ও সভাপতি রিংকু চক্রবর্তী সমস্ত রক্তদাতাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এদিন সবুজায়নের বার্তা দিতে কুইজ কেন্দ্রের চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী সমস্ত রক্তদাতাদের হাতে একটি করে চারাগাছ উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়।

Developed by