ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক :
লকডাউনের জেরে শতাব্দী প্রাচীন চন্দ্রীর গাজন উৎসব বন্ধ রাখলেন গ্রামবাসীরা।
ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি রাজা দুর্গেশ মল্লদেবের পিতামহ নরসিংহ মল্লদেবে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। সে দিন থেকেই এই মন্দিরটিতে চৈত্র মাসের ২০-২১ তারিখ থেকে পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত রাজার নির্দেশ মতো ওই ১০-১২ দিন গ্রামের ভক্তা পুকুর থেকে পুজোপাঠ শুরু করে হাঁকড় ,জাক হাঁকড় , নদী হাঁকড় ও চৈত্র মাসের সংক্রান্তির দিন পাট ভক্তা দীর্ঘ ৫-৭ কিলোমিটার পথ চোখে কাপড় বেঁধে নদী থেকে ভরে করে জল আনে। দীর্ঘ এই ৫-৭ কিলোমিটার পথ পাট ভক্তা তার চোখ বাঁধা অবস্থায় তাকে আগুনে ধুনা মেরে রাস্তা করে নিয়ে আসা হয়। যাকে বলা হয় গরিয়া ভার। আর এই গাজন উৎসবটার মূল আকর্ষণ হচ্ছে এই দিনটিতে। যা দেখার জন্য বহু গ্রাম থেকে ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য গ্রাম থেকে ও দুর দুরান্ত থেকে প্রায় হাজার দর্শকের ভিড় হয়। শুধু এই পাট ভক্তার মুখে বাধা অবস্থায় গরিয়া ভার আনতে যাওয়ার দৃশ্য দেখার জন্য। এই দশদিন নানা রকম অনুষ্ঠান গ্রামবাসীদের অনুষ্ঠিত ছৌ নৃত্য , নন্দী ভৃঙ্গীর নাচ ও সামাজিক অনুষ্ঠান এর মধ্যে দিয়ে ব্যাপক লোক সমাগম নিয়ে অনুষ্ঠানটি পালিত হয়। লোকমুখে প্রচলিত আজ যেখানে মন্দিরটি স্থাপিত সেখানে বিশাল ঘন জঙ্গল ছিল। সেই জঙ্গলের মাঝে দুটো পাথরের মাঝখানে একটি গরু প্রত্যেকদিন এসে দুধ দিয়ে যেত। গরুটি সেই দুটো পাথরের মাঝখানে দাঁড়ালেই আপনা হতেই দুধ পড়ত। তখন রাজা নরসিংহ মল্লদেব তিনি ঠিক করেন এখানে একটা মন্দির তৈরি করতে হবে। কথামতো কাজ করলেন আর যেখানে মন্দিরটি স্থাপিত সেখানেই মন্দির তৈরি করলেন। এই মন্দিরটি কোন মূর্তি বসিয়ে প্রতিষ্ঠিত নয়। কথিত আছে এই মন্দিরের বিশাল গহ্বরের মধ্যেই এর পূজা করা হয়। আর এই গহ্বরটিতে শ্রাবণ মাস কিংবা যে কোনো সময় যারা জল ঢালেন তা কোনদিন ওই গহ্বর থেকে উপচে পড়ে না। আর সেই সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে যত জল সব ভক্তা পুকুরে গিয়ে পড়ে। ঠাকুরের ফুল-বেলপাতা পুজো করা সব ভক্তা পুকুরে পাওয়া যায়।
তথ্য ও ছবি : অনিমেষ রাউৎ।