ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক :
অফিসারের তৎপরতায় অবসরের ২২ বছর পিএফের টাকা হাতে পেলেন শ্রম দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি লেবার কমিশনার বিশ্বনাথ মুর্মু। তাঁর বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরের উত্তর বামদা এলাকায়। ১৯৯৭ সালে ৩০ সেপ্টেম্বর অবসর নিয়েছিলেন শ্রম দপ্তরের ডেপুটি লেবার কমিশনার(খড়গপুর) পদ থেকে। সেই সময় তাঁর পিএফের ৯০ শতাংশ টাকা পেলেও বাকি থেকে গিয়েছিল ১০ শতাংশ টাকা। আর সেই টাকা ফিরে পেতে হন্য হয়ে ঘুরেছেন ২২ বছর ধরে। বিভিন্ন জায়গায় চিঠিপত্র করেও কোন সুরাহা হয়নি।
অবশেষে মঙ্গলবার সেই টাকা হাতে পেয়ে কার্যত খুশি অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু। টাকা তার অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাওয়ার পর বিশ্বনাথ মুর্মু বলেন,‘এ যেন না পাওয়ার ধন পেয়েছি! পিএফের ওই টাকার আশা আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম। ২২ বছর আগের ৭১ হাজার টাকা আজ সুদ সমেত ৩ লক্ষ ৯১ হাজার ২৯৮ টাকা পেয়েছি। আধিকারিক আমার বাড়িতে এসে সমস্ত কাগজপত্র দেখে নিয়ে গিয়ে যেভাবে কাজ করেছেন, তাতে মনে হয় উনি পূর্ব জন্মে নিশ্চয় আমার ছেলে ছিলেন! নাহলে এভাবে কেউ খাটত না।’
বর্তমানে শ্রম দপ্তরের ডেপুটি লেবার কমিশনার(খড়গপুর) বিতান দে বলেন,‘চলতি বছরের জুন মাসে এজি বেঙ্গল থেকে একটি চিঠি দিয়ে আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পিএফের টাকা এই দপ্তরের আধিকারিকের বকেয়া রয়ে গিয়েছে।’
কিন্তু ২২ বছর আগের কাগজ খুঁজতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন শ্রম দপ্তরের ডেপুটি লেবার কমিশনার(খড়গপুর) বিতান দে। তিনি বলেন,‘প্রথমে আমি খড়গপুর ট্রেজারি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে খবর নিই বিশ্বনাথ মুর্মু নামে কোন পেনশেন হোল্ডার রয়েছে কিনা? সেখানে এই নামে কোন পেনশেন হোল্ডার নেই। তারপর ঝাড়গ্রাম ট্রেজারি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করে খবর নিয়ে জানতে পারি ওই একই নামে দু’জন পেনশন হোল্ডার রয়েছে। তারপর শ্রম দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকের সন্ধান পাই। তাঁর বাড়িতে গিয়ে সমস্ত কাগজপত্র জোগাড় করে এজি বেঙ্গলে পাঠায়। এমনকি সেখানে গিয়ে অফিসারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। তারপর উনি টাকা হাতে পেয়েছেন সোমবার।’
২২ বছর পর পিএফের টাকা হাতে ফেরত দিতে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েছেন বর্তমান আধিকারিক বিতান দে।
বিতান দে বলেন,‘অবসরের পর ওই টাকায় মানুষের সম্বল হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এতদিন পর টাকা ফেরত দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে প্রথমে আমি চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু হাল ছেড়ে দিইনি। অনেক খোঁজাখুজি করে ব্যক্তির বাড়ি পৌঁচ্ছে উনার হাতে টাকা তুলে দিতে পেরে ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুবই আনন্দিত। কারন নিত্যদিনের অফিস কাজের বাইরে গিয়ে একাজটি একেবারে অন্য ধরনের। আর সবচেয়ে বড় কথা আমি আজ যে পদে কর্মরত। একদিন উনিই এই পদেই কর্মরত ছিলেন।’