Breaking
1 Nov 2024, Fri

ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শনি-রবিতে ঝড়বৃষ্টির শঙ্কা

ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেক্স :- ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’। পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব অংশে যে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে, তা আজ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে চলেছে। বঙ্গোপসাগরের উপরে থাকাকালীন এই গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তারপর ধেয়ে আসবে উপকূলের দিকে। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল, এই ঝড়ের অভিমুখ ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলের দিকে হতে পারে। তবে তা যে প্রবল শক্তিতে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে, বুধবার সেকথাই স্পষ্ট করেছেন আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা। এর প্রভাবে কাল, শুক্রবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সবক’টি জেলার আকাশ মেঘলা থাকবে। পূর্বাভাস অনুযায়ী সব কিছু চললে, শনিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে দক্ষিণবঙ্গে। রবিবারও তা চলবে একইভাবে। উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ও উত্তর ২৪ পরগনায় বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের আগাম সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। উপকূলবর্তী এই তিন জেলা বাদ দিলে দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, কোনও নিম্নচাপ চূড়ান্তভাবে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত সেটির নামকরণ করা যায় না। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্রে সৃষ্ট ঝড়গুলির নামকরণ হয় একটি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে। তালিকা অনুযায়ী, এক-একটি দেশ এক-একটি ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়ার সুযোগ পায়। সেই নির্দিষ্ট বিধি অনুযায়ী এবার ছিল পাকিস্তানের পালা। তাদের প্রস্তাবিত নাম হল ‘বুলবুল’। তাই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়কে ‘বুলবুল’ নামেই চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তবে ঝড়ের নাম যা-ই হোক না কেন, শীত আসার দোরগোড়ায় আবহাওয়া দপ্তরের এমন পূর্বাভাসে বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কালীপুজোর আগে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টির পর ক’দিন যেতে না যেতেই ফের ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাসে বিরক্ত হচ্ছেন মানুষ। তটে এসে আছড়ে পড়ার পর ‘বুলবুল’-এর ক্ষয়ক্ষতি করার ক্ষমতা কতটা থাকবে বা ঠিক কোন সময়ে তা এসে রাজ্যের উপকূলে আছড়ে পড়বে, তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলেনি আবহাওয়া দপ্তর। তবে তাদের বুলেটিন থেকে জানা যাচ্ছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে ঝোড়ো হাওয়ার দাপট বাড়বে। সঞ্জীববাবু জানান, বুধবার সন্ধ্যায় নিম্নচাপটির অবস্থান ছিল কলকাতা থেকে প্রায় এক হাজার কিলোমিটার দূরে। সেটি ক্রমশ উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে সরছে। এই অবস্থায় সেটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এবং বাংলা, ওড়িশা ও বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসবে।
তবে আজ, বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে আবহাওয়া থাকবে বুধবারের মতোই। আকাশ কখনও পরিষ্কার, কখনও ঘোলাটে থাকবে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে যথাক্রমে ৩১ বেং ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। ঝোড়ো হাওয়া শুরু হলে স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা আরও কমবে। এদিকে, সমুদ্রের উপরে যেহেতু এদিন ঘূর্ণিঝড়টি শক্তিশালী হওয়ার কথা, তাই আজ বিকেল থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যেই সমুদ্রে রয়েছেন, তাঁদের আজ বিকেলের মধ্যেই ফিরে আসার বার্তা পাঠানো হয়েছে। আজ সন্ধ্যা থেকে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সমুদ্র উত্তাল হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।

Developed by