তৃণ্ময় বেরা :- ঝাড়গ্রাম থেকে ২৮ কিলোমিটার ঘন শালের জঙ্গল ঘেরা পাকা রাস্তা পেরোলেই পড়বে ফেঁকোঘাট। এই ফেঁকোঘাট থেকে বাঁদিকে ৬কিলোমিটার পেরোলেই পড়বে তপশিয়া চক। এই তপশিয়া চক থেকে প্রায় ৪থেকে সাড়ে ৪কিমি পথ পেরোলেই রয়েছে এই শতাব্দী প্রচীন শিব মন্দির। এই মন্দির প্রায় ৫০০ বছর পুরোনো। স্থানীয় সূত্র জানা গিয়েছে ৫০০ বছর আগে এই এলাকা শাল জঙ্গলে ভর্তি ছিল। তারপর এখানে একটি দেবতা রুপি বাঘ ছিল। আদিবাসীরা শিকার করতে গিয়ে দেখতে পেয়েছিলেন ওই বাঘকে। তারপরই মহারাজকে এসে জানিয়েছিলেন এ ব্যাপারে। মহারাজ এসে জঙ্গল সাফ করিয়ে ওই দেবতারুপি বাঘ দেখেন। পরে ওই দেবতারুপি বাঘকে এনে একটি খড়ের ছাউনি করে ওখানেই স্থাপন করেন বাঘটিকে। একজন ব্রাহ্মণ ঠিক করে দেন সেটি পুজো করার জন্য। তারপর থেকেই এই এলাকার নাম ব্যাঘ্রেশ্বর। এই ব্যঘ্রেশ্বর মন্দিরের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে ডুলুং নদী। নদী নামার জন্য সিড়ি দিয়ে রয়েছে বাঁধানো ঘাট। এই মন্দিরের কাছে বড় ধরনের চড়কের মেলাও বসে। এখানে একটি কালি মন্দিরও রয়েছে।
এই টুরিস্ট স্পট থেকে বেরিয়ে বাম দিকে প্রায় ৫০০মিটার গেলেই দেখা যাবে প্রায় ১২০ বছর পুরোনো বেলিয়াবেড়া রাজবাড়ী।
প্রায় ১৮ বিঘা এলাকা নিয়ে এই রাজবাড়ী রয়েছে। প্রায় ৪০০ বছর আগে উড়িশ্যা থেকে আগত রাজা কৃষ্ণচন্দ্র দাস প্রহরাজের আমলে প্রতিস্থাপন হয়েছিল এই রাজবাড়ী। এর দেওয়ালে রয়েছে নানান ধরনের কারুকার্য। রাজ্যা প্রথম স্থানে স্থানে রয়েছে এই রাজবাড়ীর দরজার উপর আঁকা কারুকার্য। রাজ কৃষ্ণচন্দ্রের অবর্তমানে এখনো পুজো হয় তাঁর তলোয়ার।
রজাবাড়ী গেলে এখনো দেখা করা যাবে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের বংশধরেদের সাথে।
থাকার জন্য এই এলাকার ব্যাঘ্রেশ্বর টুরিস্ট স্পটে রয়েছে একটি গেস্ট হাউস। এই গেস্ট অনায়াসে রাত্রি যাপন করা যেতে পারে। এই গেস্ট বুকিং করা যাবে ওয়েবসাইটের। ফোনের মাধ্যমে বুকিং করা যায়। এই দ্বিতল ডুলুং গেস্ট হাউসে ৪টি ডবল বেড রুম রয়েছে। এছাড়া ওখানে গেস্ট হাউসের ভিতরেই খাবার রুমে দিয়ে আসার সু ব্যবস্থা রয়েছে। এই এলাকায় কোনো রেস্টুরেন্ট না থাকলেও বেলিয়াবেড়া বাজার এলাকায় অনেক হোটেল রয়েছে।