Breaking
1 Nov 2024, Fri

পুজোয় আসুন চিল্কিগড়ে, ঐতিহ্যের দেবী কনক দুর্গা আর প্রকৃতির মাঝে সবুজের হাতছানি

তথ্য ও লেখক : স্বপ্নীল মজুমদার: লালমাটির রাস্তার দু’পাশে প্রাচীন বনস্পতির ঘন জঙ্গল। সেই পথ উজিয়ে গেলেই জঙ্গলের মাঝে চিল্কিগড়ের শতাব্দী প্রাচীন কনকদুর্গা মন্দির। ডুলুং নদীর ধারে ৬৩ একর জঙ্গল এলাকার মধ্যে রয়েছে কনকদুর্গার মন্দির। চিল্কিগড় রাজ পরিবারের কুলদেবী হলেন কনকদুর্গা। মন্দির সংলগ্ন জঙ্গলে রয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো প্রজাতির দুষ্প্রাপ্য প্রাচীন গাছগাছড়া ও ভেষজ উদ্ভিদ। প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখেই এখানে পর্যটকদের জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন ও সৌন্দর্যায়নের কাজ হয়েছে। জঙ্গলপথে ঢোকার আগে তৈরি রয়েছে বিশাল তোরণ। মন্দির প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের জন্য জঙ্গলঘেঁষে রয়েছে একাধিক মানানসই বসার জায়গা ও শিশুদের উদ্যান। মন্দিরের সামনে বাহারি আলোর সাজে জলের সুদৃশ্য ফোয়ারা। মন্দির সংলগ্ন দেবীদহ খালে বোটিংয়ের ব্যবস্থাও আছে। বছর পাঁচেক আগে সৌন্দর্যায়নের ফলে চিল্কিগড়ের আকর্ষণ আরো বেড়েছে। মন্দিরের পুরোহিত আতঙ্কভঞ্জন ষড়ঙ্গী ও গৌতম ষড়ঙ্গী জানান, প্রতি দিনই অসংখ্য দর্শনার্থী এখানে আসেন। বিশেষ
দিনগুলিতে দর্শনার্থী অনেক বাড়ে। এ ছাড়া শীতের সময় মন্দিরের কিছুটা দূরে পিকনিক করতেও আসেন অনেকে। জঙ্গলের ভিতরে এখন পিকনিক করা নিষেধ। মন্দির ও জঙ্গল এলাকাটি প্লাস্টিক মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষিত।
পশ্চিমবঙ্গ জীববৈচিত্র্য পর্ষদ চিল্কিগড়ের জঙ্গল এলাকাটিকে ‘হেরিটেজ-সাইট’ ঘোষণা করেছে।
কলকাতা থেকে সড়কপথে চিল্কিগড়ের দূরত্ব ১৮২ কিমি। ঝাড়গ্রাম রেল স্টেশন থেকে মাত্র ১৫ কিমি দূরে চিল্কিগড়।
ডুলুং নদীর কুলঘেঁষা চিল্কিগড়ের ৬১ একর জঙ্গল এলাকাটি রেইন ফরেস্টের মতো। চিল্কিগড়ের জঙ্গলে রয়েছে ১০৮টি শিবলিঙ্গ। ১৭৪৯ খ্রীস্টাব্দের আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে জামবনি পরগনার সামন্ত রাজা গোপীনাথ সিংহ মত্তগজ স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে গভীর জঙ্গলের মাঝে কনকদুর্গার মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের পাশাপাশি, ডুলুং নদী ও জঙ্গলের সৌন্দর্যের টানে সারা বছর এখানে বহু পর্যটক আসেন। দুর্গাপুজোর মহানবমীর দিন তো লক্ষাধিক জনসমাগম হয়। মন্দির চত্বরে পর্যটকদের রাত্রিবাসেরও ব্যবস্থা আছে।

Developed by