Breaking
25 Dec 2024, Wed

হবিবপুরে ইসকনে জগন্নাথদেবকে ৫৬ ভোগ

ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেক্স:- পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সঙ্গে একই নিয়মে ইসকনেও রথযাত্রা উৎসব পালিত হয়। মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের সঙ্গে উৎসবের সাতদিন হবিবপুর ইসকন মন্দিরেও নানা অনুষ্ঠান হয়। প্রচুর ভক্ত সমাগম হয়। এখানে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার জন্য সারা বছরের ন্যায়ে ৫৬ ভোগের আয়োজন করা হয়।ভোগে অন্নের সঙ্গে বিভিন্ন পদের ভাজা থাকে। যার মধ্যে রয়েছে আলু ভাজা, পটল ভাজা, তালের বড়া, কাঁচকলা ভাজা। আবার বিভিন্ন পদের শাক ও নানা পদের তরকারি। সেখানেও লাউ ঘণ্ট, এঁচোড়, পটলের দোরমা, পনির, ধোকা প্রভৃতি থাকে। সবশেষে পায়েস ও মিষ্টি পরিবেশিত হয়। শুধু দেশি পদই নয়, পাস্তা, চাউমিনের মতো বিদেশি পদও নিবেদন করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রান্না শুরু করে ১১ টায় তা শেষ করার পর ভগবানকে ভোগ নিবেদন করা হয়। রান্নার জন্য চারজন রাঁধুনি রয়েছেন। জগন্নাথদেবকে সারাদিনে মোট পাঁচবার ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ বাল্য ভোগ নিবেদন হয় গোপাল ঠাকুরকে। এরপর সকাল সাড়ে ৮টায় ফল, চাপাটি ও সব্জি সহযোগে ফল ভোগ নিবেদন করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় মধ্যাহ্নভোজে ৫৬ ভোগ পরিবেশিত হয়। বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ফের দেওয়া হয় ফল ভোগ। সব শেষে রাত সাড়ে আটটায় চাপাটি, সব্জি, ক্ষীর, মিষ্টি নিবেদনের পর ঠাকুরের শয়ন দেওয়া হয়। আর ভগবানের আরাধনা করার জন্য রয়েছেন ৮ জন ব্রাহ্মণ।হবিবপুর ইসকনের সভাপতি সুন্দর নিমাই দাস মহারাজ বলেন, মন্দিরে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার পাশাপাশি বাকি সমস্ত দেবতার জন্যই ভোগের আয়োজন করা হয়। রথের দিন জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে রানাঘাটে স্বাস্থ্যন্নোতির মাঠে অস্থায়ী মাসিরবাড়িতে রাখা হয়। উল্টো রথ পর্যন্ত জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রা সেই মাঠেই থাকেন। উৎসবের সাত দিন সাত রকম পোশাক পরেন তাঁরা। সেগুলি হল, যথাক্রমে পদ্ম বেশ, গজ বেশ, রাজ বেশ, বৃন্দাবন বেশ, রথ বেশ, স্বর্ণ বেশ ও পুষ্প বেশ। উৎসবের কটা দিন প্রতিদিন সন্ধ্যায় নাটক, কৃষ্ণলীলা, নাচ, কীর্তন, ভজন, গৌড় আরতি, গীতা পাঠ প্রভৃতি নানা অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার মানুষকে খিচুড়ি ভোগ বিতরণ করা হয়। রথ উপলক্ষে রানাঘাটে মেলা বসে। প্রতিদিন সেখানেও প্রচুর ভক্তর সমাগম হয়।কথিত আছে, ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা প্রভুপাদ চেয়েছিলেন তাঁর ভক্তদের কলকাতা থেকে মায়াপুরে দীর্ঘপথ অতিক্রম করার মাঝে কোনও এক জায়গায় একটি বিশ্রামাগার তৈরি করতে। মূলত তাঁর ইচ্ছাতেই মায়াপুর ইসকনের বেশ কিছুটা আগে হবিবপুরে ১৯৯৭ সালে আর একটি ইসকন মন্দির তৈরি হয়। তখন মন্দিরটি ছিল ছোট। এরপর ২০১০ সালে এখানেই একটি বড় আকারে ইসকনের মন্দির তৈরি করা হয়। এই মন্দিরে জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ ছাড়াও রয়েছে রাধা, মাধব ও গৌড়, নিতাই এর বিগ্রহ। রথের সাতদিন জগন্নাথ বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ রানাঘাটে চলে গেল এখানে পূজিত হন রাধা, মাধব ও গৌড়, নিতাই।সুন্দর নিমাই দাস মহারাজ আরও বলেন, এখানে শুধু মন্দির নয়, রয়েছে দাতব্য চিকিৎসালয়। বিনোদনের জন্য পার্ক। মন্দিরের পিছনে রয়েছে বিশাল গোশালা। ভবিষ্যৎ গীতা কলেজ তৈরি করার পরিকল্পনায় রয়েছে। অন্যদিকে, হবিবপুর ইসকনের রাহুল মহারাজ বলেন, রথ ও উল্টো রথের দিন এখানে প্রচুর ভক্তের সমাগম হয়। সেখানে বড় বড় কড়াইতে করে প্রায় দশ হাজার ভক্তের জন্য খিচুড়ি ভোগ তৈরি করা হয়।

Developed by