ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্ক : জীবন যন্ত্রণার ‘মু্ক্তি’! ডুলুং নদীর উপরে ৭০ মিটার সাঁকো বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন উত্তরাশোল গ্রামের বাসিন্দারা। জামবনি ব্লকের ডুলুং নদীর একদিকে উত্তরাশোল এবং অন্যদিকে চিল্কিগড়। রাত-বিরেতে রোগীদের নিয়ে যাওয়া থেকে যাতয়াতের ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়তেন বাসিন্দারা। গত তিন মাস ধরে ডুলুং নদীর উপরে সাঁকো তৈরির কাজ করেছেন উত্তরাশোল গ্রামের বাসিন্দারা। এহেন কাজে মূল নেতৃত্ব দিয়েছেন উত্তরাশোল গ্রামের বাসিন্দা শ্রীনাথ হাঁসদা, অনুপ সোরেন, গোবিন্দ সোরেন ও চিল্কিগড়ের নিমাই মহাকুড়, চাঁদরাই হেমব্রমরা। আর তাঁদের সঙ্গে একাজে হাত মিলিয়েছেন গ্রামের যুবকরা। উত্তরাশোলের দীপক মাণ্ডি, বারিশা মুর্মু, টুসা মুর্মু, সুবোধ মাণ্ডি, বাসু সরেন, রামজিৎ হাঁসদা, চিত্তরঞ্জন হাঁসদা, রাধানাথ হেমব্রম, রামদাস হাঁসদা সহ স্কুল পড়ুয়া সুনীল হাঁসদা, বিধূভূষণ সরেন, সাগেন মাণ্ডি, চাঁদ হেমব্রমরা। ৩০টি শাল গাছের খুঁটি দিয়ে এবং বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি তৈরি করা হয়েছে। সাঁকোর ভিত মজবুত করতে শাল খুঁটির নিচে বালি-সিমেন্ট দিয়ে শক্ত করা হয়েছে। রবিবার উদ্বোধনেও দেখা যা নতুনত্ব। প্রথমত, আদিবাসী প্রথা অনুযায়ী সাঁকোর নিচে পুজো করা হয়। তারপর সবুজ ফিতা কেটে সাঁকোর উদ্বোধন করেন তিন জন শিক্ষক। শিক্ষক ধনঞ্জয় মুর্মু, বিমল সরেন, বিধূভূষণ সরেনরা এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেরাও খুশি। এই তিনজন শিক্ষকের বাড়ি ওই গ্রামে নাহলেও আশেপাশের গ্রামে। এলাকার মানুষের উপকারে লাগবে এহেন কাজ যে সত্যিই প্রশংসার তা বলেন শিক্ষকরা। শিক্ষক বিমল সরেন উত্তরাশোল গ্রামের যুবকদের কাজ দেখে আনন্দিত হয়ে ৩ হাজার খরচ করা জন্য দান করেন। সবথেকে উল্লেখ্য যে, বার বার প্রশাসনকে জানিয়ে যখন ব্রীজ হয়নি তখন গ্রামের মানুষের সকলের প্রচেষ্টায় সাঁকো তৈরি সত্যি অভিনব। এমনকি একত্রিত হয়ে যে কোন দুর্লভ কাজও যে সহজ হয়ে যায় তা প্রমাণ করল উত্তরাশোল গ্রামের বাসিন্দারা। ব্যক্তি নয় সমষ্টির স্বার্থের কথা মাথায় রেখে যে কাজ উত্তরাশোল করেছে, তা নজির সৃষ্টি করেছে। ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশের পক্ষ থেকে উত্তরোশাল সহ সাঁকো তৈরির কাজে যুক্ত সকল ব্যক্তিদের কুর্নিশ জানায়।