ঝাড়গ্রাম নিউজ ফ্ল্যাশ ডেস্কঃ তৃণমূল কর্মীকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপানোর ঘটনায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে গ্রেপ্তার করল পুলিস। ধৃতের নাম, রাজীব কর। রাজীব বেলিয়াবেড়া ব্লকের চোরচিতা অঞ্চলের সভাপতি। রাজীবের বাড়ি বেলিয়াবেড়া থানার চোরচিতা গ্রামে। মঙ্গলবার বিকালে ঝাড়খন্ডের চাকুলিয়া থেকে রাজীবকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। আজ, বুধবার ধৃতকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হবে। পুলিস সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠোর বলেন, ওই ঘটনায় রাজীব করকে গ্রেপ্তার হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বেলিয়াবেড়া থানার চোরচিতা গ্রামে একটি ভূষিমাল দোকানে চাল-ডাল কিনে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল কর্মী চন্দন দে। ওই সময় স্থানীয় একটি সরস্বতী পুজোর বিসজর্নের শোভাযাত্রা যাচ্ছিল। ওই শোভাযাত্রায় থাকা তৃণমূলেরই কিছু লোকজন চন্দনকে কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। এই নিয়ে চন্দনের সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূলের কয়েকজনের বচসা-হাতাহাতি হয়। এই ঘটনার জেরে স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূল কর্মী চন্দনকে হাঁসুয়া দিয়ে কোপান বলে অভিযোগ। প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় একটি বাড়িতে লুকিয়ে যায় চন্দন। কিন্তু হামলাকারীরা পিছু ধাওয়া করে হাঁসুয়ার কোপে তাঁর মাথা সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়। ওই ঘটনায় চন্দনের দাদা মৃন্ময় বেলিয়াবেড়া থানায় অভিযোগ জানান। এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। চন্দনের পরিবারের অভিযোগ, গত বছর ৭ নভেম্বর রাতে দলেরই কিছু লোকজন চন্দনের উপরে বোমাবাজি করেছিল। ওই সময় জখম হয় চন্দন। বেলিয়াবেড়া থানায় দলের তৎকালীন অঞ্চল যুব নেতা রাজীব করের নামে অভিযোগ করেছিলেন চন্দন। কিন্তু ওই সময় পুলিস রাজীবকে গ্রেপ্তার করেনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি টিঙ্কু পালের অনুগামী রাজীবকে সম্প্রতি চোরচিতা অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। চন্দন হলেন বেলিয়াবেড়া পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি কালীপদ সুরের অনুগামী। কালীপদ ও টিঙ্কু গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ। এলাকার ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে সেই বিবাদ আরও জোরালো হয় গত বছর নভেম্বরে। তার জেরে এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উত্তেজনা ছিল। ৩ ফেব্রুয়ারি রাতের হামলা সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই ফল বলে মনে করছে দলীয় নেতৃত্ব। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঝাড়গ্রামে দলীয় মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় পুলিস সুপারকে ডেকে মন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিছেন, এরপর কোন গন্ডগোল হলে দু’পক্ষকেই গ্রেপ্তার করবেন। ওই ঘটনায় পুলিস দিলীপ বান নামে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছিল। দিলীপ বান বর্তমানে আদালতের নির্দেশে জেল হেফাজতে রয়েছে। রাজীবের গ্রেপ্তারের কথা শুনে বেলিয়াবেড়া ব্লক তৃণমূলের সভাপতি টিঙ্কু পাল বলেন, পরে ফোন করছি। জেলা তৃণমূলের সভাপতি বীরবাহা সরেন টুডু বলেন, আইন আইনের পথে চলছে। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। কেউ দোষ করলে, সে দলের যেই পদে থাকুক না কেন, সে শাস্তি পাবেই।